প্রতিমা তৈরিতে মগ্ন পড়ুয়া রোহন মাল। হুগলি কলেজিয়েট স্কুলে। ছবি: ভোলানাথ সাহাসরস্বতী পুজো এলে ব্য়স্ততা যেন বেড়ে যায় স্কুল পড়ুয়া রোহন মালের। কারণ সে তৈরি করে প্রতিমা। বছর দুয়েক ধরে এমনই হয়ে আসছে।
এবার সরস্বতী পুজোর আয়োজনে সময় কম পাওয়া গিয়েছিল। কারণ স্কুল খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। শেষ পর্যন্ত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর স্কুল খুলে যায়। প্রতিমার কী হবে? মুশকিল আসান রোহন আছে তো।
গত ২ বছর ধরে রোহনের হাতে গড়া বাগদেবী পুজিত হন হুগলি কলেজিয়েট স্কুলে। বাগদেবীর আরাধনায় মাতল আপামর বাঙালি। স্কুলে স্কুলে চলছে মা সরস্বতী পুজা । তবে কোভিড পরিস্থিতির জন্য ইতিমধ্যে বহু স্কুলই এবারের মত পুজো থেকে বিরত থাকার কথা জানিয়েছে।
কারণ নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত বিদ্যালয়গুলি খুললেও সরকারের কাছ থেকে নীচু ক্লাসগুলি খোলার এখনও কোন অনুমতি মেলেনি। তাই যাদের জন্য পুজো তাঁরাই যদি উপস্থিত না থেকে তাহলে পুজো করে কি হবে! এই ভাবনা থেকেই বেশকিছু স্কুল কোভিড আবহে এবারের মত সরস্বতী পুজো থেকে বিরত থাকার কথা জানিয়েছে।
সে পথেই হয়তো হাঁটতে চলেছিল চুঁচুড়ায় অবস্থিত হুগলি কলেজিয়েট স্কুল। কিন্তু ১২ তারিখ থেকে অল্প সংখ্যক পড়ুয়াদের নিয়ে বিদ্যালয় খোলার অনুমতি মেলার পর সরস্বতী পুজোর কথা মাথায় আসে প্রধান শিক্ষক তপন কুমার গোস্বামীর। কিন্তু হাতে আর বেশি সময় নেই। তাই পাল বাড়িতে ঠাকুর তৈরীর বায়না নেবে কিনা সে চিন্তায় পরেন তপনবাবু।
খবর পেয়ে মাত্র ৭ দিনের মধ্যে নিজের হাতেই প্রতিমা গড়ে তুলল কলেজিয়েটের একাদশ শ্রেনীর ছাত্র রোহন মাল। গত বছরও রোহন এই বিদ্যালয়ে পুজোর জন্য সরস্বতী প্রতিমা বানিয়েছিল। চুঁচুড়া খড়ুয়াবাজার এলাকার বাসিন্দা রোহন ছোটবেলা থেকেই প্রতিমা গড়ার কাজে আগ্রহী।
পাড়ার মৃৎশিল্পীদের দেখে সেই আগ্রহই বাস্তবে রূপান্তরিত হয়। নিজের হাতে তৈরী প্রতিমা বিদ্যালয়ে ২য় বার পুজিত হবে তা ভেবেই খুশি রোহন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন কুমার গোস্বামী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্রের হাতে গড়া প্রতিমা আমাদের বিদ্যালয়েই পূজিত হবেন, এটা সত্যই গর্বের বিষয়।