সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (CBSE) ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে ওপেন-বুক অ্যাসেসমেন্ট (Open-Book Assessment) অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি পাইলট স্টাডিতে ইতিবাচক ফলাফল ও শিক্ষকদের সমর্থন পাওয়ার পর বোর্ডের গভর্নিং বডি জুন মাসে এই প্রস্তাব অনুমোদন দেয়।
প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতি টার্মের তিনটি খাতায়-কলমে পরীক্ষার অংশ হিসেবে ভাষা, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান – এই মূল বিষয়গুলিতে ওপেন-বুক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এতে পরীক্ষার্থীরা উত্তর লেখার সময় পাঠ্যপুস্তক, ক্লাস নোট বা অন্যান্য রেফারেন্স বই ব্যবহার করতে পারবে। CBSE জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP) ২০২০ এবং ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক ফর স্কুল এডুকেশন (NCFSE) ২০২৩-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
উদ্দেশ্য – মুখস্থের বাইরে গিয়ে প্রয়োগমুখী শিক্ষা
NCFSE-র ব্যাখ্যায়, ওপেন-বুক পরীক্ষার মূল লক্ষ্য কেবল মুখস্থ বিদ্যা নয়, বরং প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে প্রয়োগ, বিশ্লেষণ ও যুক্তি দেওয়ার ক্ষমতা যাচাই করা। শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা ও বাস্তব প্রয়োগের দক্ষতা বাড়ানোই এর উদ্দেশ্য।
পাইলট প্রকল্পের ফলাফল
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে CBSE ওপেন-বুক পরীক্ষার পাইলট প্রকল্প শুরু করেছিল। ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর ১২% থেকে ৪৭% এর মধ্যে ছিল। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, রেফারেন্স ব্যবহারে ও ধারণা প্রয়োগে এখনও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। তবুও শিক্ষকরা এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন এবং মনে করছেন, সঠিক দিকনির্দেশনা দিলে এটি কার্যকর হতে পারে।
আগের অভিজ্ঞতা ও নতুন পরিকল্পনা
CBSE-র কাছে ওপেন-বুক পরীক্ষা নতুন নয়। ২০১৪ সালে ‘ওপেন টেক্সট বেসড অ্যাসেসমেন্ট’ (OTBA) চালু হয়েছিল নবম ও একাদশ শ্রেণির কিছু বিষয়ের জন্য। তবে ২০১৭-১৮ সালে তা বন্ধ হয়, কারণ শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলক দক্ষতা গড়ে তোলায় এটি যথেষ্ট সফল হয়নি।
এবার বোর্ড মানসম্মত নমুনা প্রশ্নপত্র তৈরি করবে যাতে প্রশ্নের মান বজায় থাকে ও সমালোচনামূলক চিন্তাকে উৎসাহিত করা যায়। যদিও এটি বাধ্যতামূলক নয়, ইচ্ছুক স্কুলগুলির জন্য CBSE একটি কাঠামো তৈরি করবে।
বোর্ডের আশা, এই নতুন উদ্যোগ পরীক্ষার চাপ কমাবে এবং শিক্ষার্থীদের মুখস্থ নির্ভর পড়াশোনা থেকে সরিয়ে এনে বাস্তবমুখী ও ধারণাভিত্তিক শিক্ষায় উৎসাহিত করবে।