
২০১৪ সালের টেট পাশ করা সব শিক্ষকদের হালহদিশ জানতে তৎপর হয়ে উঠল সিবিআই। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে পাশ করা শিক্ষকদের ব্যাপারে খুঁটিনাটি জানতে চাওয়া হয়েছে। ১০ দফা তথ্য চাওয়া হয়েছে তাঁদের কাছে। গত ১৬ জুন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে জেলা সভাপতিদের। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সিবিআই নির্দেশ মেনে ২০১৪-র টেট পাশ করা প্রার্থী নথি দিতে হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলির কাছে ১০ দফা নথির তালিকা দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে ঠিক কী কী দিতে হবে সিবিআই-কে। এক্সেল ফর্মাটে পাঠাতে হবে তথ্য। তাতে থাকবে পাশ করা পরীক্ষার্থীর সিরিয়াল নম্বর, টেট রোল নম্বর, নাম, স্কুলের নাম, নিয়োগপত্রের তারিখ, কাজে যোগদানের তারিখ এবং ট্রান্সফার করা হলে তার চিঠি। সেই সঙ্গে চাওয়া হয়েছে ১০ দফা নথি।
১। নিয়োগপত্রের প্রতিলিপি
২। নিয়োগের রিপোর্ট
৩। ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড
৪। টেটে যোগ্যতা অর্জনের নথি
৫। শিক্ষাগত যোগ্যতার সমস্ত পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড, রেজাল্ট ও সার্টিফিকেট
৬। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রশিক্ষণের অ্যাডমিট, মার্কশিট, শংসাপত্র বা বিএড বা তার সমতুল পরীক্ষার অ্যাডমিট, রেজাল্ট ও শংসাপত্র
৭। জাতিগত শংসাপত্র (যদি থাকে)
৮। পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ নথি 'প্যারাটিচার এগেজমেন্ট লেটার' যদি পার্শ্ব শিক্ষকের অভিজ্ঞতায় নিয়োগ পেয়ে থাকেন
৯। প্রাক্তন-সরকারি কর্মচারী হলে প্রতিলিপি
১০। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য নথি।
বলে রাখি, ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। পরীক্ষা হয় ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর। ফলপ্রকাশ পরের বছর, ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে। ওই বছরই বেরোয় প্রথম মেধাতালিকা। প্রায় ২৩ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন ৪২ হাজার জন। ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বরেও দ্বিতীয় আর একটি মেধাতালিকা বের করে পর্ষদ।
ওই মেধা তালিকায় অনিয়মের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন জনৈক রমেশ আলি। তাঁর বক্তব্য, দ্বিতীয় মেধা তালিকাটি সম্পূর্ণ বেআইনি। মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত সওয়াল করেনন, আদতে দ্বিতীয় প্যানেল বেআইনিভাবে ১ নম্বর বাড়িয়ে অনেককে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় তালিকায় চাকরি পাওয়া ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআই-কে।
আরও পড়ুন- চিরকূটে পাস আচার্য-বদল বিল, অধিকার রক্ষা করতে জানি: রাজ্যপাল