মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়ালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বললেন, 'অনুব্রত মণ্ডল বিজেপিতে যায়নি বলেই জেল খাটছে।' এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের 'সেনাপতি' বলেছেন, 'অনুব্রত শুভেন্দু অধিকারী, অজিত পাওয়ারদের মতো বিজেপিতে গেলে ধোওয়া তুলসীপাতা হয়ে যেত।'
প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় ২০২২ সালে গ্রেফতার হন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত। বর্তমানে তৃণমূলের কেষ্টর ঠিকানা তিহাড় জেল। এই প্রথম অনুব্রতকে ছাড়া বীরভূমে লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে নেমেছে জোড়াফুল শিবির। এবারও প্রার্থী শতাব্দী রায়। তাঁর বিপরীতে লড়ছেন বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধর। যিনি প্রাক্তন আইপিএস। এই আবহে অনুব্রতের যেভাবে পাশে দাঁড়ালেন অভিষেক, তা আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
অনুব্রত প্রসঙ্গে এদিন অভিষেক আরও বলেছেন, 'গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করেছেন অনুব্রতকে। ১০ দিন আগেও মেমারিতে বিহার-উত্তরপ্রদেশ থেকে গরু আসছিল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উত্তরপ্রদেশ, বিহারে তো তৃণমূল সরকার নয়, দুটোই বিজেপির সরকার। অনুব্রত জেলে, তারপরেও গরুপাচার হয়েছে। কতবার তলব করেছেন যোগীকে? এটাই বিজেপির ওয়াশিং মেশিন।'
এর আগে, বীরভূমে গিয়ে অনুব্রতের পাশে থেকে বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বীরভূমের সভায় 'কেষ্ট'র অবদানের কথা তুলে ধরেন তৃণমূলনেত্রী। বলেছিলেন, 'কেষ্টকে কতদিন জেলে ভরে রেখে দিয়েছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে দূর করতে পারেনি। ও কাজ করেছে। কাজ করতে জানে ও।' এর পরই এই নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেন মমতা। বলেন, 'যদি ওর (কেষ্ট) নামে অভিযোগ থাকে, আপনাদের (বিজেপি) নেতাদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। ক'টা অ্যাকশন নিয়েছেন?'
গরু পাচার মামলায় ২০২২ সালের অগস্ট মাসে গ্রেফতার হন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তার পর থেকেই জেলবন্দি এই দাপুটে নেতা। পরে এই মামলায় তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকেও গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বর্তমানে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন অনুব্রত এবং সুকন্যা। অনুব্রতের গ্রেফতারের পর থেকেই তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা। তৃণমূলে অনুব্রত মণ্ডলকে 'ভোলা যাবে না, তাঁর কৌশলেই লোকসভা নির্বাচনে বীরভূমে লড়তে চায় ঘাসফুল শিবির। বীরভূমের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে এমন বার্তাই দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। বৈঠক শেষে শতাব্দী সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, 'নেত্রী বলেছেন, অনুব্রত বেরিয়ে আসবে। সাংগঠনিক ক্ষেত্রে ওর অনেক ভূমিকা রয়েছে। দল থেকে যাতে তাকে সম্মান দেয়,ভুলে যেন না যাওয়া হয়। এ সব কথা বলেছেন নেত্রী। অনুব্রত জেল থেকে ফিরলে তার জায়গা পাবে। এটা নেত্রী বলেছেন।' ২০২২ সালে নেতাজি ইন্ডোরের এক সভা থেকে বীরভূমের নেতাদের উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, 'কেষ্ট একদিন জেল থেকে বেরোবেই। সেদিন ওঁকে নায়কের সংবর্ধনা দিয়ে বার করে আনতে হবে।'