অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের (Loksabha Election) দিনক্ষণ ইতিমধ্যেই ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে দেশজুড়ে সাত দফায় ভোট প্রক্রিয়া চলবে। তারপর ৪ জুন নির্বাচনের ফল ঘোষণা। পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে যে আসনগুলি নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে, তার মধ্যে অন্যতম কেন্দ্র আলিপুরদুয়ার (Alipurduar)। পাহাড়, জঙ্গলে ঘেরা অপেক্ষাকৃত নতুন এই জেলার লোকসভা কেন্দ্রের (Loksabha Kendra) মধ্যে সবচেয়ে ছোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনায় ৷ অস্তিত্ব সংকট দেখা দিয়েছিল আগেই ৷ এবার কি শেষ পর্যন্ত ভোট দিতে পারবে তারা?
আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের (Buxa Tiger Reserve) জঙ্গলের মাঝে অবস্থিত ভুটিয়া বস্তি (Bhutia Basti)। সেখানকার ১০/১ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোট হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। ভোটার সংখ্যা প্রায় ৭৮ জন। আগের নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন ভয়ে ভয়ে। একটা সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বা কোনও সুব্যবস্থা ছিল না। অন্যদিকে বন্যপ্রাণীর হামলার আতঙ্ক ছিল। এবার কী হবে? ভোট দেওয়া সম্ভব হবে, নাকি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রটি তুলে নেওয়া হবে? এই প্রশ্নই ছিল স্থানীয়দের মনে। কীভাবে ভোট দেবেন তারা? খোঁজ নিল bangla.aajtak.in।
জানা যাচ্ছে, বছরভর পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা কুমারগ্রাম ব্লকের বিট অফিসকেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্র করা হয়। এর আগে বিধানসভা, লোকসভা বা পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় কেন্দ্রটি সংস্কার করে ভোটদানের উপযুক্ত করা হয় স্থানীয়দের জন্য। বিদ্যুৎ সংযোগ, জলের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া বন্যপ্রাণীর হামলা রুখতে দিনরাত বুথ পাহারার দায়িত্বে থাকতেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্মীরা।
বক্সার জঙ্গলের মধ্যেই ছিল বস্তি। স্বাভাবিকভাবেই কষ্টে দিন কাটাতে হত। এরপর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রায় ৫১টি পরিবারকে জঙ্গলের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ভুটিয়া বস্তি থেকে কালচিনি ব্লকের মেছপাড়া চা বাগানের কাছে সরকারি জমিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আবাসন প্রকল্প সহ অন্যান্য ব্যবস্থা করে কালচিনি ব্লকে রাখা হয়েছে তাদের। প্রতিটি পরিবার সরকারি উদ্যোগে জমি পেয়েছে এবং কিছু অর্থও দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক, কুমারগ্রাম ব্লকের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এক সরকারি আধিকারিক জানান, "এবার ওনারা ভোট দিতে পারবেন। যেখানে ট্রান্সফার হয়ে গিয়েছেন কালচিনি ব্লকে, সেখান থেকে সরকারের তরফে গাড়ি করে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে, ভোট কেন্দ্র তৈরিও করা হবে। আগে ৭৮ জন ছিল, এখন মনে হয় আরও কয়েকজন বাড়বে। ভোটার লিস্ট বের হলে, তারপর জানা যাবে। আগেরবারের মতো এবারও সেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রেই হবে। কালচিনি থেকে নিয়ে আসা হবে। ওখানে সম্প্রতি জলের প্রোজেক্ট হয়েছে। সেখানে একটি ভাল পাম্প হাউজ আছে। সম্ভবত সেখানেই বুথের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।"
আলিপুরদুয়ারের জেলাপ্রশাসক আর.বিমলা সংবাদমাধ্যমকে জানান, "ভুটিয়া বস্তির বাসিন্দাদের ভোট কেন্দ্রের ঠিকানা এখনও আপডেট করা হয়নি। তাই তারা ভুটিয়া বস্তি পোলিং বুথে (PHE পাম্প হাউস) ভোট দেবে। এই বুথে সম্ভবত এটা তাদের শেষ ভোট। এরপর ভোটার কার্ডে তাদের ঠিকানা আপডেট হয়ে গেলে, বুথটি বন্ধ হয়ে যাবে।"