কয়েক মাস আগে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতির আসনে বসতেন তিনি। সেই তিনিই এবার আদালতের চৌহদ্দি পার হয়ে নির্বাচনের রণভূমিতে পদার্পণ করেছেন। আবার সেই তিনিই আদালতে মামলা দায়ের করলেন। তিনি, তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি। বুধবার কমিশনের অর্ডারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
ঠিক কী ঘটেছে?
সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন অভিজিৎ। যে মন্তব্যের কারণে অভিজিৎকে প্রথমে শোকজ করেছিল কমিশন। পরে তাঁকে সেন্সর করা হয়। ২৪ ঘণ্টার জন্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই নির্দেশ দিয়ে কমিশনের তরফে অভিজিৎকে জানানো হয় যে, তাঁর মতো এক জন শিক্ষিত মানুষের কাছ থেকে এই ধরনের শব্দ কাম্য নয়। কমিশনের এই সমস্ত মন্তব্য সম্বলিত অর্ডারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন অভিজিৎ।
বুধবার এই সংক্রান্ত হলফনামায় সই করার পর হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে অভিজিৎ বলেন, 'ভারতের নির্বাচন কমিশন একটি অর্ডার পাস করেছে। সেটাতে আমার মতে অনেক অবাঞ্ছিত মন্তব্য আছে। আমাকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। মানহানি করা হয়েছে। এই কলঙ্ক এবং মানহানির বিরুদ্ধে আমি আলাদা পদক্ষেপ করব। অর্ডারটিকে চ্যালেঞ্জ করছি।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। তমলুকের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে কমিশনে চিঠি দিয়েছিল বাংলার শাসকদল। অভিজিতের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ এবং তাঁর প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারির আর্জি জানানো হয়েছিল। অভিজিতের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছিল। কমিশনে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, গত ১৫ মে হলদিয়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন অভিজিৎ। চিঠিতে অভিজিতের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। চিঠির বয়ান অনুযায়ী, অভিজিৎ বলেছেন, 'মমতা ব্যানার্জি তুমি কত টাকায় বিক্রি হও?' এছাড়াও আরও কিছু মন্তব্য করেছেন অভিজিৎ। বিজেপি প্রার্থীর এই মন্তব্যের নিন্দায় সরব হয়েছে তৃণমূল। অতীতে মুখ্যমন্ত্রী প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের কথাও উল্লেখ করা হয় ওই চিঠিতে।