ব্রিগেডের জনসভা থেকে রবিবার রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রার্থী তালিকায় নানা চমক রয়েছে। প্রার্থী হয়েছেন কয়েকজন অভিনেত্রী, ক্রিকেটারও। এবার বাঁকুড়ার বিষ্ণপুর লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে সুজাতা মণ্ডলকে। এই আসনে বিজেপির হয়ে আবারও টিকিট পেয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। সৌমিত্র হলেন সুজাতার প্রাক্তন স্বামী। তাই এই আসনে লড়াইয়ের দিকে নজর থাকবে রাজ্যবাসী। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, এবার বিষ্ণপুর আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যেতে পারে। তাঁদের যুক্তি, গত লোকসভা নির্বাচনে প্রায় একা প্রচার করে স্বামী সৌমিত্র খাঁকে জিতিয়েছিলেন সুজাতা।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের এক্ষেত্রে যুক্তি, সুজার পক্ষে লড়াইটা সহজই হবে। কারণ তাঁর এই মাঠ চেনা। পার্থক্য শুধু তিনি নিজে এবার প্রার্থী। ২০২১ সালের কিছুদিন আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সুজাতা। বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীও করা হয়। যদিও তাঁকে হারতে হয়েছিল। বর্তমানে সুজাতা বাঁকুড়া জেলাপরিষদের সদস্য। রাজনৈতিক মহল সুজাতা প্রথমে পরিচিত ছিলেন সৌমিত্রের স্ত্রী হিসাবেই।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে বড়জোড়ার বাসিন্দা সুজাতার সঙ্গে বিয়ে হয় সৌমিত্র খাঁয়ের। সেই সময় তিনি বিষ্ণুপুরের তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন। ২০১৯ সালে সৌমিত্র যোগ দেন বিজেপিতে। তাঁকে গেরুয়া শিবির প্রার্থীও করে তাঁকে। যদিও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ে আদালতের নির্দেশে নিজের এলাকায় প্রচারে যেতেই পারেননি সৌমিত্র। প্রচার সামলেছিলেন সেই সময়ের স্ত্রী সুজাতা। জেতার পরে জয়ের কৃতিত্ব সুজাতাকেই দিয়েছিলেন সৌমিত্র।
এদিকে, ২০২১ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে সৌমিত্রের সঙ্গে সুজাতার সম্পর্কে চিড় ধরে। সৌগত রায় ও কুণাল ঘোষের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন সুজাতা। ওইদিনই স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা করেন সৌমিত্র। বিধানসভা ভোটে সুজাতাকে প্রার্থীও করে তৃণমূল। তবে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। গত বছরই আদালতে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় সৌমিত্র এবং সুজাতার। গত পঞ্চায়েত ভোটে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের ৪৪ নম্বর আসনে জিতে যান সুজাতা। এ বার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করল সুজাতাকে।
নিজের প্রার্থীপদ নিয়ে সুজাতা বলেন, 'সারাটা বছর আমি মানুষের পাশে থাকি। জেলা পরিষদেও কাজ করছি। আমার বিশ্বাস মানুষ আমার সাথ দেবে, ভালবাসা দেবে। মানুষ ভুল বুঝে ভোট দিয়েছিল সৌমিত্রকে। বিষ্ণপুরের মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি ২০১৯ সালের জন্য। মানুষ বিজেপির সাংসদকে একটা দিনের জন্যও পাশে পায়নি।'