এবারে নাকি তিনি ভোটে দাঁড়াতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু 'দিদি'র (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) অনুরোধ রাখতেই ফের প্রার্থী হয়েছেন। এমনটাই দাবি টলিউডের অভিনেতা দেবের। সোমবার দাসপুরে নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন দেব ওরফে দীপক অধিকারী। ঘাটালের দুই বারের সাংসদ দেবের ঘোষণা, ‘যদি মনে হয়, আমি ১০ বছরে সাংসদ হিসাবে কাজ করেছি, তা হলে আপনারা জানেন কাকে ভোট দিতে হবে আগামী ২৫ মে।’ তাঁর দাবি, ‘দাসপুরের মানুষকে রাজনীতি শেখাতে হবে না। আপনারা বোঝেন সেটা। যদি মনে হয়, কাজ করেছি আপনারাই ঠিক করবেন।’
এদিন সকাল থেকে দাসপুর এলাকায় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ছাড়াও প্রচারসভা করেছেন তৃণমূল প্রার্থী দেব। সেখানে তিনি বলেন, ‘দিদিকে না বলতে পারিনি। মানুষের ভাল করার জন্য আবার নির্বাচনের ময়দানে আমি। আর আমি এক টাকাও নিয়ে যাইনি। পাশে থাকার চেষ্টা করেছি মানুষের।’
এ বার লোকসভা ভোটে দেব প্রার্থী হবেন কি না, এ নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা ছিল। পরে অবশ্য দেবের মন্তব্য ছিল, ‘আমি ছাড়লেও রাজনীতি আমাকে ছাড়বে না।’ তখনই এক প্রকার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে তৃতীয় বার লোকসভা ভোটের ময়দানে নামছেন দীপক অধিকারী। যদিও পুরো বিষয়টিকেই 'গিমিক' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিরোধী শিবিরের কেউ কেউ।
দেবকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তলবের প্রেক্ষিতে তাঁকে দুর্নীতিগ্রস্থ বলে দেগে দেয় বিজেপি। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে দেব বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আসছে, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমি কারও এক টাকা নিইনি। যদি কারও কাছে প্রমাণ থাকে তা হলে ইডি-সিবিআইয়ের কাছে দিয়ে আসুন। আমি তো ইডি-সিবিআইয়ের ভয়ে দলবদল করিনি।’ পাশাপাশি, ক'য়েকদিন আগেই একটি ‘অডিয়ো ক্লিপ’ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়।
রাজনীতির টানাপড়েনে ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলইকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল।সূত্রের খবর, তারপর থেকে ঘাটাল তৃণমূলে অনেকটাই টালমাটাল পরিস্থিতি। তাঁর বিপরীতে বিজেপি প্রার্থী করেছে হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে। তাই দেব যাতে হেরে না যায়, তাই তাঁর সভা সফল করতে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল। এমনটাই সূত্রের খবর।
এদিন দেব বলেন, ‘ঘাটালে বন্যার সময় পাশে দাঁড়িয়েছি। ছবি তোলার জন্য আসিনি। করোনা পরিস্থিতির সময়ও পাশে দাঁড়িয়েছি। নির্বাচনের সময় অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু আমি কাজে বিশ্বাস করি। গত ১০ বছর সবাইকে ভাল রাখার চেষ্টা করেছি। যতটা পেরেছি, সৌজন্যের রাজনীতি করেছি। কখনও কাউকে খারাপ কথা বলিনি।’
দেবের আরও দাবি, ‘যদি মনে হয় ভাল কাজ করেছি, রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডারের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এবং কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা আটকে দেওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সেই টাকা দেওয়ার ব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে আপনারা ঠিক করবেন কাকে ভোট দেবেন।’