লোকসভা আসন বদলে গিয়েছে মেদিনীপুরের বিদায়ী বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের। নতুন ময়দানে এবার নতুন পরীক্ষা রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির। কেন্দ্র বদল নিয়ে দিলীপ সোমবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন, 'যেখান থেকে আমি লড়ব, সেটাই আমার কেন্দ্র, সেখান থেকেই জিতব।' সোমবারই নিজের নতুন কেন্দ্র বর্ধমান-দুর্গাপুরে পৌঁছে গিয়েছেন দিলীপ। আর মঙ্গলবার সকালেই দুর্গাপুরে চায়ের আড্ডায় জনসংযোগ সারলেন দিলীপ। সেইসঙ্গে প্রিতপক্ষ তৃণমূলের কীর্তি আজাদকেও জবাব দিলেন আত্মবিশ্বাসী দিলীপ ঘোষ।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের প্রসঙ্গে বলেন, ''আমি যেখানেই যাই সমর্থকদের পাশে পাব। আশাবাদী নতুন আসনে জিতব।'' প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ সম্পর্কে তাঁর মন্ত্য, ''কীর্তি আজাদ প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার। তাঁকে আমি দাদার মত সম্মান করি। তিনি দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কিন্তু বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের কতটুকু চেনেন তিনি? ভাতার -মন্তেশ্বর এগুলো কি উনি চেনেন?'' দিলীপ বলেন, ''বিরোধী প্রার্থীকে আমি সম্মান করছি। কিন্তু তিনি বাংলার রাজনীতি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। উনি ক্রিকেটের পিচে ভাল ফল করতে পারেন, কিন্তু রাজনীতির পিচ আমাদের তৈরি।'' দিলীপ আরও বলেন, ''কীর্তি আজাদ কিছুই জানেন না,উনি ভোটে লড়তে এসেছেন। দিদির হাত ধরে তিনি এসেছেন, সেই দিদির পা টলছে, তাঁর বাড়ির লোকই তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়, বাংলার লোক কখন ধাক্কা মারবে উনি কিছুই জানতে পারবেন না।'' এরপরেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, ''দিদি গোয়ায় গিয়ে বলে গোয়ার মেয়ে, বাংলায় বলে বাংলার মেয়ে, নিজের বাবা কে তো ঠিক করুক।''
প্রসঙ্গত, বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রর বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দিলীপ ঘোষের নাম ঘোষণার পরেই চেনা ছন্দে জনসংযোগে নেমে পড়েছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার সিটি সেন্টারে হোটেল থেকে বেরিয়ে চতুরঙ্গ মাঠে প্রাতর্ভ্রমণে যান এবং সেখান থেকে সিটি সেন্টার এলাকা ঘুরে ফের চতুরঙ্গ মাঠে এসে প্রাতভ্রমণকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরে স্থানীয় কাশীরাম বস্তি এলাকায় দেওয়াল লিখন করেন। তারপর মেন গেট এলাকায় চায়ে পে চর্চায় যোগ দেন দিলীপ ঘোষ।
এদিন সকাল থেকে দিলীপ ঘোষকে দেখতে সর্বত্রই ভিড় জমে সাধারণ মানুষ থেকে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ বলেন, ''সারা পশ্চিমবাংলায় কে কী করেছে তার রেকর্ড আছে আমাদের কাছে, যদি শুধরে না যায় তাহলে আমরা শুধরে দেবো, তাদের বাড়িতে বসে ইলেকশন টিভিতে দেখতে হবে। পুলিশ অফিসাররা তাদের ডিউটি পালন করুক।''রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে নিয়েও মন্তব্য করেন। দিলীপ বলেন, ''এই মন্ত্রীর কোন স্ট্যাটাস নেই, ৪১ লক্ষ টাকা কোন টাকা হল? কোটি কোটি টাকা না হলে টিএমসির নেতা-মন্ত্রীদের কোনো স্ট্যাটাস নয়।"
এদিন স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিতর্কিত মন্তব্য করতেও দেখা গেছে দিলীপ ঘোষকে। তিনি বলেন , ''কোনও সরকার দীর্ঘস্থায়ী হয় না । আমি লালু প্রসাদ যাদবের, মুলায়ম সিংহের সরকার দেখেছি। পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে আমি কথাও বলি না। এমন কিছু যেন না করেন যাতে ঘরে বসে টিভিতে নির্বাচন দেখতে হয়। তারা তাদের কাজ করুন আমরা আমাদের কাজ করব।" দুর্গাপুর থেকে এক প্রকার পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী।