মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ। সোমবার ফের কার্তিককে চড়া সুরে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওন্দার সভায় নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন মমতা। ফের কার্তিককে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'ধর্মের নামে বিজেপি করে বেড়ান। বিজেপির চিহ্ন বুকে লাগিয়ে করুন। প্রমাণ ছাড়া কিছু বলি না।'
ঠিক কী বলেছেন মমতা?
কার্তিককে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি কী বলেছিলাম? আমি রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধে নয়। আমি কেন একটা ইনস্টিটিউশনের বিরুদ্ধে হব? কেন অসম্মান করব! কয়েকদিন আগে মহারাজ অসুস্থ ছিলেন, দেখতে গিয়েছিলাম। সেটা নয়। আমি বলেছি দু'একজনের কথা। গঙ্গাসাগরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অফিস আছে। আশ্রম আছে। ওরা ভাল। ওরা ভালবাসে। আমি একটি লোকের নাম বলেছিলাম। তাঁর নাম কার্তিক মহারাজ। তিনি আমাদের এজেন্টকে বসতে দেননি। ভোটের আগে মুর্শিদাবাদে যে দাঙ্গা হয়েছে, তার হোতা ছিলেন উনি। আগে অধীর করতেন। এখন বিজেপি করেন। রেজিনগরে ভোটের ২ দিন আগে দাঙ্গা করেছিলেন, সেখানে ওঁর আশ্রম। আশ্রম চালান, আপত্তি নেই। উনি তৃণমূলের এজেন্টদের বসতে দেন না। ওখানে কিছু লোককে খেপিয়েছেন , যাঁরা ছানার ব্যবসায়ী। খবর আমিও রাখি। এলাকায় এলাকায় গিয়ে ধর্মের নামে বিজেপি করে বেড়ান। আপনি করুন। কিন্তু বিজেপির চিহ্নটা বুকে লাগিয়ে রেখে করুন। লুকিয়ে লুকিয়ে কেন? আমি যা বলি, প্রমাণ ছাড়া বলি না। আমাদের রাজ্যে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেবে না, দাঙ্গা করবে, আমি ছেড়ে দেব!'
প্রসঙ্গত, ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। সেদিন হুগলির গোঘাটের সভায় মমতা বলেন, 'সব সাধু সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের এক জন মহারাজ আছেন। অনেক দিন ধরে শুনেছি। কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রমকে শ্রদ্ধা করি...কিন্তু যে লোকটা বলে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করছে।' মমতার এই মন্তব্যের পাল্টা রবিবার বিষ্ণুপুরের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'তৃণমূল সাধুসন্তদের গালিগালাজ করছে।' ভোটব্যাঙ্কের জন্য সাধুদের অপমান করা হচ্ছে বলেও তোপ দাগেন মোদী।
মমতার মন্তব্যের পাল্টা তাঁকে আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন কার্তিক মহারাজ। ৪ দিনের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব না দিলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে সরব হয়েছেন কার্তিক।
অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রীর সভায় ভারত সেবাশ্রমের সন্ন্যাসীদের যাওয়া প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'আমি সেটাকে সমর্থন করি না কারণ যাঁরা এই ধরনের সংগঠন করে থাকেন, তাঁরা সব ধরনের মানুষকে সেবা করার মধ্য দিয়ে এই ধরনের সংস্থার সঙ্গে জড়িত থাকেন। প্রধানমন্ত্রী কেন, কারও মঞ্চে যাওয়া উচিত নয়, না কংগ্রেস, না তৃণমূল, না বিজেপি।'