লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শেষ হলেই কন্যাকুমারীতে গিয়ে ধ্যানে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার মোদীর এই ধ্যানে বসা নিয়ে কটাক্ষ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, 'উনি নাকি দেবতার থেকেও বড় দেবতা। তাই যদি হয়, তবে ওঁর ধ্যান করার কী প্রয়োজন! লোকে ওঁর ধ্যান করবেন।' এরপরেই মমতা বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রীর ধ্যান টিভিতে দেখাতে পারে না। এটা নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করে। আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাব।'
ঠিক কী বলেছেন মমতা?
বুধবার বারুইপুর এলাকায় সভায় মোদীর ধ্যান করা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, 'ধ্য়ান করলে কেউ ক্যামেরার সামনে ধ্যান করেন? প্রতিবার একটা নির্বাচনের আগে বসে থাকে, আর লোককে দেখায় ধ্যান করছি...আমার দু:খ হয়, ঋষি অরবিন্দ তৈরি করেছিলেন। সমুদ্রের উপর একটা ভাল জায়গা, লোকে ঘুরতে যায়। স্বামী বিবেকানন্দ খুব ভালবাসতেন। সেখানে উনি ধ্যান করবেন! উনি নাকি দেবতার থেকেও বড় দেবতা। তাই যদি হয়, ওঁর ধ্যান করার কী প্রয়োজন, লোকে ওঁর ধ্যান করবে।' উল্লেখ্য, সম্প্রতি এক সভায় মমতা কটাক্ষের সুরে বলেছিলেন যে, মোদীকে একটা মন্দির বানিয়ে দেওয়া হবে।
তাঁর সংযোজন, 'নির্বাচনের পরে এভাবে প্রচার করতে পারেন না। আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাব। উনি ধ্যান করতেই পারেন, কিন্তু টিভিতে তা দেখাতে পারে না।'
আগামী ১ জুন শেষ দফার লোকসভা নির্বাচন। ভোট গণনা ৪ জুন, মঙ্গলবার। দেশের মসনদে তৃতীয় বারের জন্য বসতে মরিয়া মোদী। এবার ৪০০-র বেশি আসন জেতার আশায় বুঁদ বিজেপি। এই আবহে ভোটের প্রচার শেষের পরই সোজা কন্যাকুমারী যাবেন মোদী। আগামী ৩০ মে কন্যাকুমারীতে পৌঁছবেন মোদী। ১ জুন পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় শেষ হচ্ছে এ বারের লোকসভা নির্বাচনের প্রচার। পঞ্জাবের হোসিয়ারপুরে শেষ সভা করবেন মোদী। সভা শেষ হলেই সোজা কন্যাকুমারী যাবেন তিনি। তারপরে সেখানে যাবেন বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়্যালে। ৩১ মে থেকে ১ জুন সন্ধ্যা পর্যন্ত ধ্যান করবেন নমো।
তবে এই প্রথমবার নয়, এর আগেও ধ্যানে বসেছিলেন মোদী। আধ্যাত্মিক জগতে ডুব দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শেষে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের প্রতাপগড় পরিদর্শন করেছিলেন মোদী। ২০১৪ সালে প্রথমবার ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছিলেন মোদী। এরপরে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের কেদারনাথে ধ্যান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
হিন্দু ধর্মে মনে করা হয়, কন্যাকুমারীতে পাথরের উপর দাঁড়িয়ে ভগবান শিবের জন্য তপস্যা করেছিলেন দেবী পার্বতী। আবার ১৮৯২ সালে ওই একই পাথরের উপর বসে ৩ দিন তপস্যা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। এবার ওই পাথরে বসে ২৪ ঘণ্টার ধ্যান করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।