বিজেপি বাংলার সংস্কৃতি বিরোধী। এহেন অভিযোগ তৃণমূলের উপরতলা থেকে নিচুতলার নেতানেত্রীদের মুখে আকছার শোনা যায়। রবিবার আরামবাগের সভা থেকে পাল্টা তৃণমূলকেই বাংলার সংস্কৃতি বিরোধী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দিন কয়েকটি নেট মাধ্যমে তাঁকে নিয়ে করা একটি মিমের প্রশংসা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এদিকে ওই একই ধরনের মিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তৈরি করা হলে আসরে নামে রাজ্য পুলিশ। সেই প্রসঙ্গ তুলে মোদী বলেন,'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজি নজরুল ইসলাম ও সত্যজিৎ রায়ের ভূমি এটা। তৃণমূলের রাজত্বে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। বিরোধী ও সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বরকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে কোনও হাসি-মশকরার পোস্ট বা কার্টুন শেয়ার করে দিলে তাঁকেও ধমকানো হয়। তাঁর বেঁচে থাকা মুশকিল হয়ে ওঠে'।
বাঙালি বনাম বহিরাগত তরজা আরও একবার উস্কে দিয়েছে তৃণমূল। এ দিন মোদী বলেন,'বাংলার সংস্কৃতির উপর তাদের একাধিপত্য আছে বলে মনে করে তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু এটা মা দুর্গা-কালীর ভূমি। সেই ভূমিতেই মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এখানে রাম মন্দিরের নাম নেওয়া এখন অপরাধের সামিল। সম্ভব হলে তৃণমূল বাবা তারকেশ্বর ধামেও নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে'।
রাজ্যে মহিলা ও পিছিয়ে পড়াদের অবস্থা খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে বলে দাবি করেন মোদী। তাঁর বক্তব্য,'এটা স্বামী বিবেকানন্দ ও সুভাষবাবুর ভূমি। তৃণমূল সরকার দেশের প্রতি তাঁদের আদর্শের গুরুত্ব দেয় না। বাংলার পরিচয় রাজা রামমোহন রায়। সম্ভব হলে রাজা রামমোহনের নাম থেকে রাম বাদ দিয়ে দেয়। এখানে মহিলাদের অবস্থা লাগাতার খারাপ হচ্ছে। এই ভূমিতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের। সেখানে শিক্ষার বেহাল দশা। শিক্ষায় দুর্নীতি হচ্ছে এখানে। বিসি রায়ের ভূমিতে স্বাস্থ্য পরিষেবার অবস্থা খারাপ। ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির কারণে শ্যামাপ্রসাদের আদর্শকে মানা হচ্ছে না। তৃণমূলের আমলে বাংলার সংস্কৃতির ঝলক নজরে আসছে না। ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করার জন্য যে কোনও সীমা পার করতে পারে তৃণমূল। তৃণমূল ঘোর এসসি-এসটি ও মহিলাবিরোধী। এসসি-এসটি নেতাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করে। বাগদি আর বাউড়ি সমাজের জন্য কুকথা বলে। আপনারা সেটা দেখেছেন'।
সিএএ নিয়ে হুঁশিয়ারির ঢঙে মোদী জানান,'তৃণমূলের মূল দল কংগ্রেস ধর্মের ভিত্তিতে দেশের টুকরো করেছিল। কিন্তু মতুয়া শরণার্থীদের কথা ভুলিয়ে দিয়েছে। মোদী সরকার সিএএ নিয়ে এসেছে। দুনিয়ার কোনও শক্তি এটা আটকাতে পারবে না। তৃণমূল কান খুলে শুনে নাও, আটকানোর চেষ্টা করলে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে'।