বিজেপি বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'য় ফের অস্বস্তিতে পড়ল কংগ্রেস। কেরলের ওয়েনাডে প্রার্থী ঘোষণা করেছে সিপিআই। ডি রাজার স্ত্রী অ্যানি রাজাকে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেছে সিপিআই। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওয়েনাড থেকে ভোটে লড়ে জয়ী হয়েছিলেন রাহুল। এ বার রাহুলের কেন্দ্রেই প্রার্থী দিয়ে দিল সিপিআই। যার ফলে দক্ষিণের এই রাজ্যে জোটে 'জট' তৈরি হল বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, রাহুলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। শেষ পর্যন্ত রাহুল কোন কেন্দ্র থেকে লড়বেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
অন্য দিকে, 'ইন্ডিয়া'য় আসন সমঝোতা নিয়ে কয়েকটি রাজ্যে রফা মিললেও বাংলার মতো কেরলেও জট তৈরি হয়েছে। বাংলায় বাম এবং কংগ্রেস একসঙ্গে থাকলেও কেরলের ছবিটা আলাদা। ওয়েনাড কেন্দ্রে সিপিআইয়ের প্রার্থী ঘোষণায় দুই দলের সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকল বলেই মনে করা হচ্ছে। ওয়েনাডের পাশাপাশি, কংগ্রেসের শশী থারুরের তিরুঅনন্তপুরম কেন্দ্রেও প্রার্থী দিয়েছে সিপিআই। সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে পি রবীন্দ্রনকে। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও এই কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছিল সিপিআই। তবে ২০০৯ সাল থেকে ওই কেন্দ্র থারুরের দখলে।
এই পরিস্থিতিতে রাহুলকে ওয়েনাড কেন্দ্র ছেড়ে দিতে হলে অন্য কোনও কেন্দ্র থেকে লড়তে হবে। সেক্ষেত্রে অমেঠি বা রায়বরেলিতে রাহুল যদি লড়তে রাজি না হন, তা হলে অন্য কোনও কেন্দ্র থেকে লড়তে পারেন সনিয়া-পুত্র। অমেঠি এবং রায়বরেলি কংগ্রেসের দখলে থাকত। তবে ২০১৯ সালের নির্বাচনে অমেঠি থেকে রাহুলকে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপির স্মৃতি ইরানি। আর রায়বরেলিতে এ বছর ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না সনিয়া। শারীরিক কারণে এবার রাজ্যসভায় প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ইন্দিরার পুত্রবধূ।
২০১৯ সালেও রাহুলের বিরুদ্ধে ওয়েনাডে প্রার্থী দিয়েছিল সিপিআই। সে বার ৪ লক্ষেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন রাহুল। তবে এ বার লড়াইটা অন্যরকম। সিপিআই নেতা ডি রাজার স্ত্রী অ্যানিকে ওয়েনাডে প্রার্থী করে রাহুলের বিরুদ্ধে বামেরা কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত প্রায় চার দশকের রাজনৈতিক কেরিয়ারে সিপিআইয়ে অনেক দায়িত্ব সামলেছেন অ্যানি। এই প্রথম বার লোকসভার লড়াইয়ে শামিল হলেন তিনি। এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার রাহুলকে আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিরুঅনন্তপুরমে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'কংগ্রেসের যুবরাজকে ওয়েনাড থেকে তাড়াতে চায় বামেরা...তাঁরা যুবরাজকে কেরল থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।'
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তেলঙ্গানা বা কর্নাটকের মতো কোনও রাজ্যের কোনও কেন্দ্র ওয়েনাড়ের বিকল্প হতে পারে রাহুলের জন্য। শেষ পর্যন্ত, রাহুল কোন কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়েন, সে দিকে তাকিয়ে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।