Loksabha Election 2024: জিরো পয়েন্ট। একদিকে ভারত, অন্যদিকে নেপাল (Indo Nepal Border)। তার মাঝখানে ছোট্ট গ্রাম। শুধু ছোট্ট নয়, একেবারে প্রান্তিক ও অনুন্নতও বললেও কিছুই বোঝানো যায় না। গ্রামটিতে বাস করে মোট ৭০ টি পরিবার। ভোটারের সংখ্যা ১০০-র কিছু বেশি। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড সবকিছুই আছে। কিন্তু উন্নয়নের ছোঁয়া নেই।শিলিগুড়ি (Siliguri) মহকুমার খড়িবাড়ি ব্লকের আন্তারাম গ্রাম এখনও পড়ে রয়েছে মান্ধাতার আমলে।
নেপাল সীমান্তে হওয়ার কারণে এদিন ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সমস্য়ায় পড়তে হয় এলাকার ভোটারদের। পরিচয়পত্র দেখিয়ে তারপর প্রবেশ করতে হয়। কারণ এখানে কাঁটাতারের বেড়া নেই। তবু যেহেতু ওই এলাকা জিরো পয়েন্ট তাই নিরাপত্তার কড়াকড়ি বেশি। খড়িবাড়ি ব্লকের দুলালজোত নেপালি জুনিয়ার হাইস্কুলে ভোট দেন আন্তারাম ছাট এলাকার বাসিন্দারা। নিজ এলাকা থেকে ৫ কিমি দূরে মেচি নদী পেরিয়ে ভোট দিতে যাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। তবে কিছুক্ষণ পরে অবশ্য ভোট দিতে পারেন বাসিন্দারা। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, "সীমান্ত এলাকা হওয়ায় এখানে কিছু সমস্য়া তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু পরে তা মিটে যায়। ভোটগ্রহণ হচ্ছে শান্তিপূর্ণভাবে।"
এই এলাকায় বিদ্যুৎ নেই, সন্ধ্যা হলেই বাড়িতে ঢুকে পড়ে হাতি। রাত বিরেতে সমস্যা হলে বা গর্ভবতী মহিলাকে প্রসব করাতে হলে এখনও পালকি করে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্র বাতাসিতে নিয়ে যাওয়া হয় কয়েক কিলোমিটার দূরে। বর্ষা শুরু হলেই বাচ্চাদের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কারণ রাস্তা মানে শুকনো মেচি নদী। নদীতে জল উঠলেই যাতায়াত বন্ধ। গ্রামে কোনও স্কুল নেই। তাই জল নামার অপেক্ষা করতে হয় শিশুদের। যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই মেচি নদীর পথ। তাই অন্যান্য় কাজের জন্য পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে নেপালের কাঁকরভিটা হয়ে আবার দেশে ফিরে আসতে হয়। এমনকী শিলিগুড়ি বা খড়িবাড়ি নয়, তাঁদের সবচেয়ে সুবিধা হয় নেপালের বাজার থেকে কেনাকাটা করাটাই।
সীমান্তের মেচি নদী পেরিয়ে উঁচু-নীচু অরণ্য ঘেরা এই গ্রাম। পাহাড় ভেদ করে বয়ে চলা মেচি নদীর পাশে ৭০টি পরিবার নিয়ে গড়ে উঠেছে খড়িবাড়ি ব্লকের আন্তারাম ছাট গ্রাম। ভোট আসে ভোট যায়। কিন্তু উন্নয়ন হয় না। গ্রামের বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসাস্থল কৃষিকাজ, মেচি নদীতে মাছ শিকার, বালি পাথর চালাই করে জীবিকা নির্বাহ করা। রাস্তাঘাট তো দূরের কথা, নেই কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নেই বিদ্যুৎ সুবিধা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, রেশনের বন্দোবস্তও চালু হয়নি। যদিও সভাধিপতির দাবি, বিদ্যুৎ ও জলের সমস্যা মেটানো হয়েছে।
রানিগঞ্জ পানিশালী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সান্ত্বনা সিংহ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এলাকাটি সীমান্তের একেবারে জিরো পয়েন্টে অবস্থিত। তাই কোনও কাজ করতে গেলে সেখানে সমস্যা হয়। ওই এলাকার উন্নয়নের সঠিক পরিকল্পনার জন্য পরবর্তী বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।