‘অ্যাজেন্ডা আজতক’এ প্ল্যান জানালেন সুকান্ত‘অ্যাজেন্ডা আজতক’ এর দ্বিতীয় দিনে মঞ্চে এসেছিলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। এই আবহে বঙ্গ রাজনীতি নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ। সংখ্যালঘুদের নিয়ে দলের অবস্থানও স্পষ্ট করে দিলেন সুকান্ত মজুমদার।
‘অ্যাজেন্ডা আজতক’ এর মঞ্চে মুসলিম ভোট ও বিজেপির অবস্থান নিয়ে তাঁর মতামতের ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি সাংসদ বলেন, দেশের প্রয়োজনে বাংলায় রাষ্ট্রবাদী সরকার দরকার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাষ্ট্রবাদী নয়, আমরা এবার বাংলায় বিজেপির সরকার তৈরি করব। সুকান্ত স্পষ্ট বলেন,বাংলায় মুসলিম ভোট রয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। ধর্মের ভিত্তিতে বাংলায় ভোট পাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যের সংখ্যালঘুদের কোনও উন্নতি করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তাঁদের 'দুধেল গাই' বলেন। বাংলায় ইফতার পার্টি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজয়া করেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলায় দুর্গাপুজো ও মহরম একসঙ্গে হতে পারে না।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, এখনও বাংলার সরকারি চাকরিতে মুসলিমের সংখ্যা কম। ওবিসি তকমা দিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে চাকরি দিতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অশিক্ষা কুশিক্ষা বেশি এই সম্প্রদায়ের মধ্যে। তাঁদের ভুল বুঝিয়ে রাখা হয়েছে। সুকান্ত বলেন, 'বাংলায় দুর্গাপুজো হয়, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়েছেন মহরম আর দুর্গাপুজো একসঙ্গে হতে পারে না। আমরা তো চাই মহরম আর দুর্গাপুজো একসঙ্গে হোক। সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানো হয় যে বিজেপি হলে তাদের অত্যাচার করবে কিন্তু বিজেপি 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ'-এ বিশ্বাসী। ভারতমাতার সব সন্তান সমান।' ভারতীয় জনতা পার্টির নীতি সকলের কাছে স্পষ্ট, আমরা সর্ব ধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাসী। আমাদের শাসন যেখানে রয়েছে, সেখানে হিন্দুদের জন্য আলাদা কোনও স্কিম তৈরি হয়নি। আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধা সকলকে দেওয়া হয়। এই নীতি বুঝতে পারছেন না বাংলার মুসলিমরা। নইলে প্রতি বাড়ি থেকে আব্দুল কালাম তৈরি হত।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, বিজেপি সবাইকে ভারতীয় হিসেবে দেখে, সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু হিসেবে দেখে না। বাংলায় SIR প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্রের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে গেছে। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, SIR মোকাবিলায় কলকাতায় ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। মুর্শিদাবাদ থেকে এসে কোনও মুসলিম বার্থ সার্টিফিকেট তৈরি করে নিয়ে যাচ্ছেন, সংবাদ মাধ্যমে এমন খবর সামনে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গে আবাসনগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরির বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সুকান্ত। তৃণমূল ভয় দেখিয়ে ভোট দিতে দেয় না বলেও দাবি করেন তিনি।
অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ৫৭ লক্ষ SIR ফর্ম এখনও ফিরে আসেনি, ৫০ লক্ষের বেশি লোককে হিয়ারিং-এ ডাকা হবে। বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিরা ফিরে যাচ্ছেন। মমতার জন্য সীমান্তে বেড়া দেওয়া যাচ্ছে না। জমি না দিলে কাজ হবে কী করে। এখানে আধার ও ভোটার কার্ড সহজেই তৈরি করা যাচ্ছে। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রয়েছে বাংলায়। জিন্নার বাসনা ছিল কলকাতা পাকিস্তানে থাকবে। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যয়ের জন্যই বাঙালি হিন্দুদের দেশ হয়েছে। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদীদের সাহায্য নিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।