বছরের শেষ দিনেও সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। ডিসেম্বরের শেষ দিন গরু পাচার কাণ্ডে যুক্ত অভিযোগে প্রভাবশালী যুব তৃণমূলনেতার বাড়ি অফিসে সিবিআই তল্লাশি নিয়ে দিনভর চড়ল উত্তেজনার পারদ। এ দিন সকাল থেকেই কলকাতার তিনটি ঠিকানায় বিনয় মিশ্র নামে এক ব্যবসায়ীর খোঁজে একযোগে তল্লাশি শুরু হয়৷ দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, চেতলা এবং উত্তরে ভিআইপি রোডের কাছে লেক টাউনে ওই ব্যবসায়ীর খোঁজে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা৷ বিনয়ের অপর এক পরিচয় তিনি তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। আর এই পরিচয় সামনে আসতেই ময়দানে নেমে পড়ে গেরুয়া শিবির।
জানা যাচ্ছে বাংলার শাসক দলের উপরের সারির এক নেতার ঘনিষ্ঠ বলে রাজ্য রাজনীতিতে সুবিদিত বিনয়। গত ২৩ জুলাই তাঁকে যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনি সরকারের থেকে এক্স ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান বলেও খবর। কয়লা ও গরুপাচার নিয়ে বহুদিন ধরেই শাসক শিবিরকে নিশানা করে আসছে বিজেপি। এদিন যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের নাম জড়াতেই 'ভাইপো' তুলে আক্রমণ শানান কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এরপরেই ময়দানে নামেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ট্যুইট রিট্যুইট করেন শুভেন্দু। গত ২৩ জুলাই তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে বিনয়ের নাম ট্যুইট করেছিলেন অভিষেক। তা নিয়ে খোঁচা দেন শুভেন্দু অধিকারী।
এটাই হলো ভাইপোর যোগ্য নেত্রত্ব এবং তার যোগ্য টিমের পরিচয়।
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) December 31, 2020
সত্যিতো ভাইপো পার্টিকে একটা অন্য পর্যায় নিয়েই যাবে।#তোলাবাজ_ভাইপো_হাটাওhttps://t.co/Ue6OB4nAxH https://t.co/9IHkTpJioq
গরু ও কয়লা পাচার নিয়ে বরাবরই গেরুয়া শিবির তৃণমূলকে নিশানা করে এসেছে। বলা ভাল পদ্ম শিবিরের নেতাদের নিশানায় থেকেছেন 'ভাইপো'। রাজ্যে এসে অমিত শাহ থেকে জে পি নাড্ডা সকলেই একযোগে আক্রমণ করেছেন 'ভাইপো'কে। এদিন দ্বিতীটয় ট্যুইটে শুভেন্দু শাসক শিবিরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে লেখেন, 'বুঝে রাখো, জনতা কিন্তু সব কিছু জানে'।
বুঝে রাখো, জনতা কিন্তু সব কিছু জানে।#তোলাবাজ_ভাইপো_হাটাও! https://t.co/hi3k6MtKT0
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) December 31, 2020
গত ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দিয়েই শুভেন্দু অধিকারী স্লোগান তুলেছিলেন 'তোলাবাজ ভাইপো হাটাও'। পরবর্তী সময়েও প্রতিটি জনসভায় ভাইপো নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্রের ২১ বছরের পুরনো দল ছাড়ার অন্যতম কারণ যে 'ভাইপো' তা কারও অজানা নয়। তাই অভিষেরক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার নাম গরু পাচার কাণ্ডে জড়াতেই তিনি যে রাজনীতির চেনা ছক মেনে 'ভাইপো 'কে নিশানা করবেন সেটা সহজেই অনুমেয় ছিল।
সিবিআই সূত্রের খবর, গরু পাচার কাণ্ডে প্রথমে বিএসএফ কমান্ড্যান্ট সতীশ মিশ্র এবং পরবর্তী সময়ে এনামুল হকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জেরা করে সিবিআই। তাদের কাছ থেকেই বিনয় মিশ্রের নাম উঠে আসে। তারই ভিত্তিতে আদালত থেকে সার্চ ওয়ারেন্ট বের করে এদিন চল্লাশি চালানো হয়। তবে সিবিআই আধিকারিকরা চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তল্লাশি চালালেও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি বিনয় মিশ্রের।