গত ডিসেম্বরেই মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর তার কয়েকদিন পরেই দলত্যাগ। এদিন সবাইকে অবাক করে দিয়ে পদত্যাগ করলেন মমতা মন্ত্রিসভার আরও এক সদস্য লক্ষ্মীরতন শুক্লা। রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চান সেই কারণেই মন্ত্রিসভা থেকে বিদায় নিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে এমনটাই জানিয়েছেন লক্ষ্মী। শোনা যাচ্ছে ইতিমধ্যে মন্ত্রী হিসাবে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল লক্ষ্মী বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠান চিঠিতে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও তৃণমূলের বিধায়ক হিসাবে পূর্ণমেয়াদ থাকবেন। এরপরে রাজনীতির জগত থেকে অবসর নিয়ে ফের খেলার জগতেই ফিরে যেতে চান তিনি।
অন্য কোন দলে যাবেন না বলে চিঠিতে নাকি জানিয়েছেন লক্ষ্মী। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে মন্ত্রিত্ব থেকে তাঁর হঠাৎ করে সরে যাওয়া নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। শোনা যাচ্ছে মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি হাওড়ায় তৃণমূলের সদর সভাপতির পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন লক্ষ্মী।
লক্ষ্মীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, আপাতত রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চান। ২০২০–র জুলাই মাসেই লক্ষ্মীরতনকে হাওড়া সদর তৃণমূলের সভাপতি করা হয়। আপাতত কিছুদিন বিশ্রাম নিতে চান লক্ষ্মীরতন, এমনই জানা গিয়েছে। এর পর ক্রিকেটের জগতেই ফিরতে চান ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান লক্ষ্মী।
২০২১ -এর শুরুতেই তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে লক্ষ্মীর অনুপস্থিতি নিয়ে শোরগোল পড়েছিল। পয়লা জানুয়ারি হাওড়ার কদমতলার জেলা সদর দফতরে আয়োজন করা হয়েছিল দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের মূল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় উপস্থিত থাকলেও সেই অনুষ্ঠানে কিন্তু গরহাজির ছিলেন লক্ষীরতন শুক্লা। ছিলেন না বনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়ও। দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের মুল অনুষ্ঠানে জেলার দুই মন্ত্রী তথা হেভিওয়েট নেতার অনুপস্থিতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছিল।
কয়েক মাস ধরে রাজ্যের দুই মন্ত্রী তথা হাওড়ার হেভিওয়েট নেতা অরূপ রায় এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে চলছে চাপানউতোর। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেসুরো হতেও একাধিকবার শোনা গিয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর অরূপ রায়ের সঙ্গে সমস্যা তৈরি হয়েছিল লক্ষ্মীরও। দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং লক্ষ্মীরতন শুক্লার উপস্থিতি না থাকা তাই উষ্কে দিচ্ছিল বিতর্ক। তার পরেই লক্ষ্মীর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পাশাপাশি হাওড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদও ছাড়লেন লক্ষ্মী। তাই রাজনীতি থেকে লক্ষ্মী অবসরের কথা বলেলও নতুন সমীকরণ দেখতে পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।