'ভবানীপুর আমার বড়বোন। নন্দীগ্রাম মেজবোন।' সোমবার নন্দীগ্রামের সভায় বলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম ও ভবানীপুর, দুই আসনেই দাঁড়াতে পারেন মমতা। নন্দীগ্রামে তিনি দাঁড়াবেন, ঘোষণা করেই দিয়েছেন। ভবানীপুরেও দাঁড়াবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এখন প্রশ্ন হল, কেন ভবানীপুর ছেড়ে কিংবা ভবানীপুরের পাশাপাশি নন্দীগ্রামেও দাঁড়াতে চাইছেন মমতা? ভবানীপুর কেন্দ্রকে বিশেষ ভাবে টার্গেট করেছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা ভবানীপুরে সভা করে গিয়েছেন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার করেছেন। রাজনৈতিক ভাবে ঠিক কী অবস্থা ভবানীপুরে?
ভবানীপুরের বিধানসভা ভোট চিত্র
ভবানীপুর মানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম এক যোগে উচ্চারিত হয়। ২০১১ সালে এই ভবানীপুরে জেতেন তৃণমূল নেতা সুব্রত বক্সী। ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতে যান সুব্রত। পরে সুব্রত বিধানসভায় ইস্তফা দিলে ওই আসনে ভোটে জেতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫৪ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূল নেত্রী।
২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে মমতাকে কড়া চ্যালেঞ্জ দিতে ভবানীপুরে তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস-বাম জোট প্রার্থী দেয় দীপা দাশমুন্সিকে। কড়া টক্কর দিয়েছিলেন দীপা। প্রথম কয়েকটি রাউন্ডে লিডও ধরে রেখেছিলেন। পরে অবশ্য ২৫ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতে যান মমতা।
লোকসভার নিরিখে ভবানীপুর
দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে যদি বিধানসভাওয়াড়ি চিত্রটি দেখা যায়, তা হলে একটা বিষয় স্পষ্ট, ভবানীপুর কেন্দ্রে লোকসভায় কিন্তু বিধানসভার থেকে চিত্রটায় বেশ বদল ঘটেছে। ২০১৪ সালে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন তৃণমূলের সুব্রত বক্সী। বিধানসভাওয়াড়ি ফলাফলে ভবানীপুরে বিজেপির থেকে ১৭৬ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন সুব্রত। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ভবানীপুর বিধানসভা এলাকায় কংগ্রেস পেয়েছিল ১৫,৪৮৪ ভোট। সিপিএম ২১,৯৫৪ ভোট। তৃণমূল ৪৭,২৮০ ও এবং বিজেপি ৪৭,৪৫৬টি ভোট। ফলে লোকসভা ভোটের ফলাফল বলছে, নিজের কেন্দ্রেই ভোট সংখ্যার বিচারে পিছিয়ে পড়েন তৃণমূল সুপ্রিমো।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন। দক্ষিণ কলকাতায় লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হন মালা রায়। ভবানীপুরে কড়া টক্কর দেয় বিজেপি। বাম ও কংগ্রেস জোট ১৩ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিল। একই সঙ্গে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও বিজেপির ভোটের ব্যবধান মাত্র ৩ হাজার ১৬৮।
অর্থাত্ গত লোকসভা ভোটের দিকে তাকালে ভবানীপুর কেন্দ্রের ভোটচিত্র কিন্তু মাথাব্যথার কারণ তৃণমূলের। যদিও রাজনীতিতে পাটিগণিতের সহজ অঙ্ক মেলে না অনেক সময়ই।