শেষ মুহুর্তে বাধা কেটেছে। গঙ্গাসাগার মেলার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত মকর সংক্রান্তির পূণ্যস্নান চলবে এখন গঙ্গাসাগরে। কথায় বলে সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার। পুণ্যলাভের আশায় ফি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ-লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় জমান গঙ্গাসাগরে। বাংলা তো বটেই সাগরমেলায় দেখা মেলে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচলপ্রদেশ, দিল্লি, রাজস্থান, গুজরাত থেকে আসা বহু মানুষের। প্রতিবছর গঙ্গাসাগর মেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। তবে এবার করোনাকালে সেই চেনা ছবি উধাও। ভিড়ের চাপ এবার অনেকটাই কম। তবে নিয়ম মেনে এবারও গঙ্গাসাগরে উপস্থিত হয়েছেন পুরীর শঙ্করাচার্জ স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী মহারাজ। আর বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজধানী দিল্লি থেকে ১,৫৩৩ কিলোমিটার দূরে বসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গুনগান গাইতে দেখা গেল পুরীর শঙ্করাচার্যকে। নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে একজন সঠিক রাজনীতিবিদের সেরা সব গুণ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী মহারাজ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পুরীর শঙ্করাচার্জ স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী বলেন, “একজন রাজনীতিবিদ হতে গেলে সব থেকে বড় একজন কূটনীতিবিদ হতে হবে। আর একজন সঠিক কূটনীতিবিদের প্রধান তিনটে গুন মিলন, নমন ও দমন সবই রয়েছে নরেন্দ্রমোদীর মধ্যে।” বিধানসভা ভোটের আগে এখন প্রতিদিনই রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল ও বিজেপি দ্বৈরথ উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ২০২১-এ তৃণমূলের সরকার থাকবে নাকি পদ্ম শিবির বাংলা জয় করবে তা নিয়ে যখন জল্পনা চলছে, সেই সময় বাংলায় বসে পুরীর শঙ্করাচার্যের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দরাজ সার্টিফিকেট দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
গঙ্গাসাগর মেলাকে এবারও জাতীয় মেলা ঘোষণা করার দাবি তোলেন শঙ্করাচার্জ। তিনি বলেন, “সরকার ঘোষণা করুক বা নাই করুক, আমি ঘোষণা করছি গঙ্গাসাগর মেলা রাষ্ট্রীয় মেলা।” এদিকে গঙ্গাসাগরকে আধুনিকিকরণের প্রকল্প নিয়েছে রাজ্য সরকার। একদা দুর্গম এই তীর্থভূমিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্প্রসারণের পাশাপাশি হোটেল, লজ তৈরি হয়েছে। পিকনিক স্পটও হয়েছে। গঙ্গাসাগরের মতো তীর্থভূমিতে এই ধরণের কার্যক্রম ঠিক নয় বলে নাম না করে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতেও দেখা যায় পুরীর শঙ্করাচার্যকে।