রাজ্যে করোনা কেড়ে নিল আরও এক রাজনৈতি ব্যক্তিত্বে প্রাণ। মৃত্যু হল মুরারই বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ী বিধায়ক আব্দুর রহমানের। শনিবার সকালে কলকাতার আরএনটেগোর হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এবারের বিধানসভায় প্রথমে মুরারই কেন্দ্র থেকে আব্দুর রহমানকেই প্রার্থী করেছিল তৃণমূল কংগ্রেসস। কিন্তু পরে প্রার্থী বদল করে দল। তারবদলে ড. মুশারফ হোসেনকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হয়। মুরারই বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের ঘোষিত প্রার্থী ও বিদায়ী বিধায়ক আব্দুর রহমান ওরফে লিটনের শারীরিক অসুস্থতার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে সেই সময় জানানো হয়েছিল দলের তরফে।
সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হন আব্দুর রহমান। এই আক্রান্তের জেরে তার লিভারেও সংক্রমিত হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। তাঁর শারীরিক অবস্থা বিচার করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। সেই কথা জানানো হয় তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব কে। তারপরেই প্রার্থী বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলেই জানান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
এখনও পর্যন্ত করোনার বলি ২ প্রার্থী
এদিকে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কোরনায় আক্রান্ত হচ্ছেন প্রার্থীরাও। একের পর এক আক্রান্ত হচ্ছেন ডান-বাম সব শিবিরের প্রার্থীরাই। ইতিমধ্যে পঞ্চম দফা ভোটের আগেই মারণ ভাইরাস প্রাণ কেড়ে নিয়েছে দুই প্রার্থীর। ২৬ এপ্রিল অর্থাৎ সপ্তম দফায় সামশেরগঞ্জ আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা স্থগিত করা হচ্ছে। কারণ বৃহস্পতিবার সকালেই মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হকের মৃত্যু হয় করোনায়। জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন সামশেরগঞ্জের দাপুটে কংগ্রেস নেতা রেজাউল হক ওরফে মন্টু বিশ্বাস। করোনার উপসর্গ থাকায় ঝুঁকি না নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট আসে পজিটিভ। প্রবল শ্বাসকষ্ট থাকায় বুধবার তাঁকে জঙ্গিপুর থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। ভর্তি করা হল একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার সেখানেই মৃত্যু হয় রেজাউল হকের। রেজাউলের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই আসে দ্বিতীয় দুঃসংবাদ। নির্বাচনের মাঝে ফের করোনা প্রাণ কাড়ল আরও এক প্রার্থীর। মারণ ভাইরাসে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের আরএসপি প্রার্থী প্রদীপ নন্দীর। শুক্রবারই কোভিড-১৯-এর সঙ্গে লড়াইয়ে হার মানেন তিনি। বহরমপুরের কোভিড হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। বাহাত্তর বছর বয়স হয়েছিল প্রদীপ নন্দীর। অসুস্থ ছিলেন। আগামী ২৬ এপ্রিল এই কেন্দ্রেও ভোট হওয়ার কথা ছিল। এই আসনেই তৃণমূলের জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে প্রার্থী ছিলেন তিনি। ফলে এই কেন্দ্রেও স্থগিত হয়ে গেল নির্বাচন। প্রদীপ নন্দী সত্তোরোর্ধ হলেও রেজাউল হক কিন্তু ছিলেন তাঁর চেয়ে অনেকটাই ছোট। কিন্তু করোনা কাজকেই রেহাই দিল না।
রাজ্যের একাধিক প্রার্থী করোনা আক্রান্ত
ভোটের দফা যত বাড়ছে ততই একের পর এক প্রার্থীর করোনা সংক্রমণের খবর আসছে। শুক্রবারই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন চুঁচুড়া বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মজুমদার। করোনা আক্রান্ত হয়েছেন গোয়ালপোখরের তৃণমূলপ্রার্থী গোলাম রব্বানিও। ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন জলপাইগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপকুমার বর্মাও। অন্যদিকে করিমপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ ঘোষও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী আনন্দময় বর্মনেরও করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ২৭ মার্চ এগরায় নির্বাচনের আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী অরূপ দাস।