scorecardresearch
 

West Bengal Assembly Election 2021: শিয়রে BJP! ১৬'র ফর্মুলাতেই উত্তরবঙ্গে হারানো জমি পেতে মরিয়া মমতা?

উত্তরবঙ্গে দলীয় কোন্দল ও দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল। বিশেষ করে গৌতম দেব ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দ্বন্দ্ব। দলীয় কোন্দল ও দুর্নীতির জন্য ২০১৯ সালের লোকসভায় উত্তরবঙ্গ জবাব দিয়েছে মমতাকে।  ২০১৬ সালেও মমতার চিন্তায় ছিল কংগ্রেস ও বামেদের জোট। বিশেষ করে মালদা ও দুই দিনাজপুরে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা।

Advertisement
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
হাইলাইটস
  • ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকেই মনে করাচ্ছে
  • বিজেপি এই মুহর্তে বৃহত্তর শক্তি হয়ে উঠেছে
  • উত্তরবঙ্গে দলীয় কোন্দল ও দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল

কথায় বলে, 'একবার না পারিলে, দেখ শতবার।' 

উত্তরবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট-রাজনীতিটা অনেকটা এরকম। 'লোকসভায় গোহারা হেরেছি, এবারে পুষিয়ে দেবেন তো?' উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে সোমবার শিলিগুড়িতে ফের উত্তরের মন পেতে মরিয়া আবেদন জানালেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরের মন পেতে মমতার গতিবিধি ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকেই মনে করাচ্ছে। কী রকম?

গত বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরের 'উত্তর'

গত বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরে তৃণমূল ভাল ফল করেছিল। ৫৪টি আসনের মধ্যে ২৪টি গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে। সে বার মমতাকে উত্তরে বেগ দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। বিশেষ করে উত্তর দিনাজপুর ও মালদা। মালদায় ১২টি আসনের মধ্যে ৮টি পেয়েছিল কংগ্রেস ও দুটি পেয়েছিল বামেরা। বিজেপির দখলে গিয়েছিল একটি আসন। দার্জিলিঙেও ৬টি আসনের মধ্যে তিনটি আসন গিয়েছিল বাম ও কংগ্রেসের দখলে। তবে উত্তরের এই দুই জেলা মোটের উপর তৃণমূলের ফল ভাল ছিল। ২০১৬ সালের পরিস্থিতি এখন নেই। উত্তরবঙ্গে ভাল রকম শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। লোকসভা ভোটে তার আন্দাজ পাওয়া গিয়েছে। লোকসভায় তৃণমূলের ঝুলিতে একটি আসনও যায়নি উত্তরবঙ্গে। উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের দুর্গ আসলে আলিপুরদুয়ারের দুটি আসন, জলপাইগুড়ির দুটি, দার্জিলিংয়ের একটি, উত্তর দিনাজপুরের দুটি আসন, দক্ষিণ দিনাজপুরে তিনটি এবং মালদহের একটি আসন। বাকি ৪৩টি আসনে বিজেপি এই মুহর্তে বৃহত্তর শক্তি হয়ে উঠেছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতার ফর্মুলা

উত্তরবঙ্গে দলীয় কোন্দল ও দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল। বিশেষ করে গৌতম দেব ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দ্বন্দ্ব। দলীয় কোন্দল ও দুর্নীতির জন্য ২০১৯ সালের লোকসভায় উত্তরবঙ্গ জবাব দিয়েছে মমতাকে।  ২০১৬ সালেও মমতার চিন্তায় ছিল কংগ্রেস ও বামেদের জোট। বিশেষ করে মালদা ও দুই দিনাজপুরে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা। ২০২১ সালে মমতাকে ভাবাচ্ছে বিজেপির উত্থান। তাই এবার দলীয় কোন্দল, বিজেপি-র উত্থান ঠেকাতে নিজের স্বচ্ছভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তাকেই কাজে লাগাতে মরিয়া মমতা। যার নির্যাস, বারবার উত্তরবঙ্গ সফর। ২০১৬ সালেও একই ভাবে ভোটের আগে বারবার উত্তরবঙ্গ সফর করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ সালেও সেই ফর্মুলাতেই ফিরলেন তৃণমূল নেত্রী। দক্ষিণবঙ্গে তিনি বেছে বেছে সেই সব জায়গাতেই সভা করছেন বারবার, যেখানে লোকসভায় ভাল ফল করেছে বিজেপি। বিধানসভাওয়াড়ি ফলে পিছিয়ে ছিল কংগ্রেস।  যেহেতু উত্তরবঙ্গে লোকসভায় সব আসনেই হেরেছে তৃণমূল, তাই উত্তরে কারও উপর ভরসা না করে বারবার সফর করে নিজের ভাবমূর্তিকেই কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গের দক্ষিণে মালদা (দক্ষিণ) আসনটি লোকসভা ভোটে জিতেছিল কংগ্রেস। ত্রিমুখী লড়াইয়ে তাদের প্রার্থী আবু হাসেম খান চৌধুরী এগিয়েছিলেন ৪টি আসনে। আবার মালদহ (উত্তর) লোকসভা আসনের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভার মধ্যে ৪টিতেই এগিয়েছিল তৃণমূল এবং কংগ্রেস। অর্থাৎ, মালদহ জেলায় মোট ৮টি বিধানসভা আসনে পিছিয়েই ছিল বিজেপি।

Advertisement

শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, উত্তরবঙ্গে বিশেষ জোর দিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। জানুয়ারি মাসে টানা ৫ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন অভিষেক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গের দলীয় নেতৃত্বকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি মানুষ যাতে সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুবিধা পান। তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরও নিজে উত্তরবঙ্গে গিয়ে পরিস্থিতি বুঝে এসেছেন। 

সব মিলিয়ে মমতা বারবার উত্তরবঙ্গে গিয়েই একার ক্যারিশমায় দলের মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। 
 

Advertisement