scorecardresearch
 

West Bengal Election 2021: বাংলার মুসলিম ভোট: আব্বাস বামেদের দিকে! ওয়েইসির 'বাড়া ভাতে ছাই'?

সময় গড়াতেই আব্বাস বাম-কংগ্রেসের দিকে ঢলতে শুরু করলেন। যার নির্যাস, সিপিআই সোজা ঘোষণা করে দিয়েছে, নন্দীগ্রাম আব্বাসই লড়ছেন। কোনও প্রার্থী দেবে না বামেরা। ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলায় আসছেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। মেটিয়াবুরুজে সভা করবেন। একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর যে , ওই সভাতে আব্বাস সিদ্দিকিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। 

Advertisement
আব্বাস সিদ্দিকি ও আসাদউদ্দিন ওয়েইসি আব্বাস সিদ্দিকি ও আসাদউদ্দিন ওয়েইসি
হাইলাইটস
  • নিঃসন্দেহে সংখ্যালঘু একত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল
  • বাংলায় ঊর্দুভাষী মুসলমানের সংখ্যা কম
  • ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলায় আসছেন ওয়েইসি

বিহার ভোটের রেজাল্টের দিনই AIMIM সুপ্রিমো আসাদ উদ্দিন ওয়েইসি ঘোষণা করে দেন, বাংলায় তারা ভোটে লড়বে। এরপর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে ওয়েইসি ফুরফুরা শরিফে যান। সেখানে আব্বাসের সঙ্গে মিটিং করার পরে জানান, আব্বাসের দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টকে নিয়েই বাংলায় ভোট লড়বে মিম।

রাজনীতিতে কোনও কিছুই স্থায়ী নয়। সময় গড়াতেই আব্বাস বাম-কংগ্রেসের দিকে ঢলতে শুরু করলেন। যার নির্যাস, সিপিআই সোজা ঘোষণা করে দিয়েছে, নন্দীগ্রাম আব্বাসই লড়ছেন। কোনও প্রার্থী দেবে না বামেরা। ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলায় আসছেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। মেটিয়াবুরুজে সভা করবেন। একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর যে , ওই সভাতে আব্বাস সিদ্দিকিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। 

পশ্চিমবঙ্গ ও ঊর্দুভাষী সংখ্যালঘু

আব্বাস সিদ্দিকি ও ওয়েইসি জোট হলে, নিঃসন্দেহে সংখ্যালঘু একত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সে ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর বিরাগ সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশ ওয়েইসি-সিদ্দিকির দিকে যেতে পারত। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি মুসলমানদের সিংহভাগই গ্রামে থাকেন এবং পেশায় কৃষিজীবী। তাই সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে বামফ্রন্ট সরকার কৃষিজমি জোর করে অধিগ্রহণ করে শিল্পায়নের চেষ্টা করায় তাঁরা বিপন্ন বোধ করেন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এই প্রবণতা বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গে দেখা যায় এবং ভোটের ফলাফলেও তা প্রতিফলিত হয়।

উত্তর দিনাজপুর, উত্তর মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুর সহ উত্তরবঙ্গের কিছুটা অংশ এবং মুর্শিদাবাদের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল কংগ্রেসকে সমর্থন জুগিয়েছে। উত্তর দিনাজপুর, উত্তর মালদহে মূলত অবাঙালি ঊর্দুভাষী মুসলিমদের সংখ্যা বেশি। মুর্শিদাবাদের দিকে আবার বাঙালি মুসলমান বেশি। ওই বিস্তীর্ণ সীমান্ত অঞ্চলে প্রচুর বাংলাদেশি মুসলমানও রয়েছেন। ২০০৯ সাল থেকে সেই ভোটের বেশির ভাগটাই ধীরে ধীরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে চলে যেতে শুরু করে। ২০১১ সাল থেকে নির্বাচনগুলিতে মমতাতেই ভরসা রেখেছে বড় অংশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।

Advertisement

ওয়েইসির চাপ

এখন AIMIM হায়দরাবাদের দল। ওয়েইসি বারবার পশ্চিমবঙ্গে সভা করলেও এ রাজ্যের বাংলাভাষী মুসলিমদের মন কতটা ছুঁতে পারবেন, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ এতদিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের মূলত নিয়ন্ত্রণ করেছে ফুরফুরা শরিফই। এবার পড়ে রইল ঊর্দুভাষী মুসলিম। ওয়াইসি ভালই জানেন, ফুরফুরা শরিফ পাশে না দাঁড়ালে বাংলায় তাঁর কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ বাংলায় ঊর্দুভাষী মুসলমানের সংখ্যা কম। 

তা হলে কী দাঁড়াল? 

আব্বাস বাম-কংগ্রেস জোটে যাওয়ায়, রাজ্যের মুসলিম ভোটে একটা বড়সড় ভাগাভাগি নিশ্চিত। তাতে ওয়েইসির উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও ম্লান হয়ে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে। আবার চাপ হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। এতদিন রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের যে প্রায় একচ্ছত্র ভোট উপভোগ করতেন মমতা, আব্বাস ভোটে লড়ায় শুধু মমতার নয়, ওয়েইসিরও 'বাড়া ভাতে ছাই'।

ওয়েইসি যে ভাবে বিহারে সাফল্য পেয়েছেন, সেই পথেই সাফল্য বাংলায় তাঁর আসা কঠিন। 

Advertisement