
পশ্চিমবঙ্গের চারটি লোকসভা আসন বাদে ৩৮টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। যার মধ্যে অন্যতম চমক রয়েছে বসিরহাট আসনে। যেখানে সন্দেশখালির নির্যাতিতা রেখা পাত্রকে প্রার্থী করা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ফোনে রেখার সঙ্গে কথা বলেছেন।
তবে অপরদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে বিরুদ্ধ প্রচার। একটি ছবি অনেকেই শেয়ার করছেন। যেখানে তিন মহিলাকে বসে একসঙ্গে মদ্যপান করতে দেখা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে থাকা মাঝের মহিলাকে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী বলে দাবি করছেন কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী।
ছবিটি শেয়ার করে লেখা হচ্ছে, ক্যাপশনে লেখা হচ্ছে, "দেখুন ইনি হলো বসিরহাট লোকসভা নির্বাচনের বিজেপি পার্থী। দেখুন কি অবস্থা বিজেপির। বিজেপি হাঁটাও দেশ বাঁচাও।" এই পোস্টের আর্কাইভ লিঙ্ক এখানে দেখা যাবে।
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি পুরোপুরি ভুয়ো। বেশ কয়েক বছর পুরনো একটি ছবিকে এডিট করে সেখানে রেখার মুখ যোগ করে মিথ্যে দাবিতে পরিবেশন করা হচ্ছে।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
ভাইরাল ছবিটি ভালভাবে লক্ষ্য করলেই তাতে বেশ কিছু অসামঞ্জস্য দেখা যাবে। বিশেষ করে মাঝের মহিলার মুখ যেন আলাদা করে বসানো হয়েছে, এমন ধারণা পাওয়া যায়।
আসল ছবিটি খুঁজে বের করতে আমরা ভাইরাল হওয়া ছবিটিকে সবার প্রথম গুগল লেন্সের মাধ্যমে খোঁজার চেষ্টা করি। তখন দেখা যায়, এই ছবিটি ২০১৬ সালের ১২ অগস্টও ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছিল। যদিও সেখানে রেখা পাত্র নয়, বরং অন্য একজন মহিলাকে দেখা গিয়েছে।
সার্চ ইঞ্জিন ইয়েন্ডেক্সের মাধ্যকে এই ছবিটি সার্চ করে দেখা যায়, তামিল ব্রাহ্মিন ডট কম নামের একটি ওয়েবসাইটে সর্বপ্রথম এই ছবিটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশ পেয়েছিল। সেখানেও দেখা যায়, আগের ফেসবুক পোস্টের মতোই সেই তিনজনের ছবি রয়েছে।
ফলে বুঝতে বাকি থাকে না যে, রেখা পাত্রর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতেই আসল ছবিটি এডিট করে রেখার মুখ বসিয়ে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে।
যদিও আসল ছবিটি কবেকার, ও কোথায় তোলা সেই বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে যে ছবিটি লোকসভা নির্বাচনের আবহে ভাইরাল করা হচ্ছে, তা যে সম্পাদিত সেই নিয়ে কোনও সংশয় থাকে না।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র মদ্যপান করছেন।
ভাইরাল ছবিটি এডিটেড। আসল ছবিটি ২০১৬ থেকে ইন্টারনেটে রয়েছে। মাঝের মহিলার মুখের উপর এডিট করে রেখা পাত্রর মুখ বসানো হয়েছে।