ফ্যাক্ট চেক: ট্রাম্প ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশে ফিরেছেন শেখ হাসিনা? না, ভিডিওটি দিল্লির

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরেছেন শেখ হাসিনা।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: ট্রাম্প ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশে ফিরেছেন শেখ হাসিনা? না, ভিডিওটি দিল্লির

দ্বিতীয় বারের জন্য আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে ফের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন করতে চলেছেন রিপাবলিকান নেতা। এর আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন চলাকালীন গত ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে হওয়া অত্যাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। তার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা ধরনের জল্পনা শুরু হয়েছে। 

আর এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঢাকায় প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত তথাকথিত একটি ভিডিও। সেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি বিমান থেকে নামছেন হাসিনা এবং তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছেন কয়েকজন আধিকারিক। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে ট্রাম্প ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করায় বাংলাদেশে ফিরেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “ট্রাম জেতায় বাংলাদেশে ল্যান্ড করেছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ইউনুস ফখরুল শফিক একটাও জেনো পালাতে না পারে,ছাত্রলীগের তৃণমুলকে সিমান্ত পাহারা দেয়ার জন্য বলা হলো। - ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম।” (সব বানান অপরিবর্তিত।) একই দাবি-সহ আরও পোস্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ফেরার কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সেটি চলতি বছরের ২১ জুন হাসিনার ভারত সফরের সময় নয়া দিল্লি বিমানবন্দরে ধারণ করা হয়েছিল।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

প্রথমত, ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করার পর গতকাল অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঢাকায় ফিরলে সেই সংক্রান্ত খবর অবশ্যই বাংলাদেশি তথা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হবে। তাই ভাইরাল দাবির সত্যতা জানতে আমরা এই সংক্রান্ত একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। কিন্তু সেই সার্চে এমন কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি যা থেকে এই দাবির সত্যতা প্রমাণ হয়।

Advertisement

তবে ভাইরাল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করার সময় আমরা সেখানে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ANI ও The Print-এর লোগো দেখতে পাই। সেই সূত্র ধরে এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করলে ২০২৪ সালের ২১ জুন The Print-এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এই একই ভিডিওর ৩ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের একটি বর্ধিত সংস্করণ পাওয়া য়ায়। সেখানে The Print-এর তরফে উল্লেখ করা হয়েছে, দু’দিনের ভারত সফর উপলক্ষে দিল্লি পৌঁছালেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। Print-এর ভিডিওটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ভাইরাল ভিডিওটি সেটিরই প্রথম ৫০ সেকেন্ড থেকে কাটা হয়েছে।

এরপর এই সংক্রান্ত পরবর্তী সার্চে ২০২৪ সালের ২১ জুন বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাকে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যেখানে ভাইরাল ভিডিওর ফ্রেমের সঙ্গে মিল থাকা একাধিক ছবি-সহ লেখা হয়েছে, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশটির স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় পর নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি অবতরণ করে। ভারতের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান বিমান বন্দরে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান।”  

এরপর এই সংক্রান্ত পরবর্তী সার্চে ২০২৪ সালের ২২ জুন দ্য হিন্দুর একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাণিজ্য ও যোগাযোগ-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে ট্রাম্প ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করার পর শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ফেরার ভিডিওটি ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরেছেন শেখ হাসিনা।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ফেরার কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সেটি চলতি বছরের ২১ জুন হাসিনার ভারত সফরের সময় নয়া দিল্লি বিমানবন্দরে ধারণ করা হয়েছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement