
ফেসবুকে কবরে মাটি দেওয়ার তিনটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে " ইন্দোনেশিয়া কোরানের হাফেজকে মাটি দেয়ার সময় কবর আলোকিত হয়ে যায়। সুবানাল্লাহ ।" ছবি গুলিতে কিছু অস্বাভাবিক আলো নজরে পড়ে। আদৌ কি এখানে কোনো অলৌকিক আলো দেখা গেছিলো কবরে মাটি দেওয়ার সময় ?
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল দাবিটি বিভ্রান্তিকর। প্রথমত কবরে মাটি দেওয়ার ছবিগুলি ইন্দোনেশিয়ার নয়, মালয়েশিয়ার। এখানে কবর কোনো অলৌকিক কারণে আলোকিত হয় নি। ছবির এই অস্বাভাবিক আলোর কারণ সূর্য্যের আলো এবং ক্যামেরার লেন্সে তার প্রতিফলন।
ভাইরাল পোস্টটি আর্কাইভ হয়েছে এখানে ।
রিভার্স ইমেজ সার্চের সাহায্যে আমরা ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ার একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ভাইরাল ছবিগুলি খুঁজে পাই।
মালয় ভাষায় লেখা এই প্রতিবেদনের ইংরেজি তর্জমা থেকে জানা যায় যে ছবিগুলি ২০১৬ সালের এবং মালয়েশিয়ার নেগ্রি সেম্বিযান পাস্ উলামা কাউন্সিল- এর প্রধান ৪৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ খাইরি জাইনুদ্দিনের কবরে মাটি দেওয়ার দৃশ্য। সেই সময় এই ছবিগুলি হোয়াটসাপে বেশ ভাইরাল হয়। ছবির এই অস্বাভাবিক আলোর উৎস নিয়ে লোকে কৌতূহল প্রদর্শন করে সমাজ মাধ্যমে।
যদিও এই রিপোর্ট অনুযায়ী , মৃত ব্যক্তির ভাই ৪১ বছর বয়সী নাজরী জাইনুদ্দিন জানিয়েছেন এই কবর দেওয়ার সময় কোনো ধরণের অস্বাভাভিক ঘটনা ঘটেনি । তিনি জানিয়েছেন, " আমাদের কাছে মনে হয়নি এটি কোনো অবাক করার মত বিষয়। যখন এই ভাইরাল ছবিগুলো দেখলাম তখন কোনো ধরনের সমস্যা হতে পারে এই ভয়ে আমরা কোনো বক্তব্য প্রকাশ করিনি”।
আমরা অন্য একটি মালয় ভাষার প্রতিবেদনে একই খবর ও ছবি খুঁজে পাই। সেখানে নেগ্রি সেম্বিযান পাস্ উলামা কাউন্সিল- এর ডেপুটি মুফতি, নর আজমীর এলিয়াস এর মন্তব্য দেওয়া হয়েছে ছবিগুলির আলোর ব্যাপারে।
নর আজমীর এলিয়াস এর মতে মোবাইল ক্যামেরায় আলোর প্রতিফলনের কারণে এমনটি হয়েছে। তিনি আরও বলেন যে , কবর দেওয়ার সময় সেখানকার তাঁবুগুলো ছেঁড়া ছিলো, সেই ছিদ্র দিয়ে সূর্য্যের আলো ঢোকায় এমন আলোকিত লাগছিলো জায়গাটি। কোনো অলৌকিক বা অস্বাভাবিক ঘটনার কথা মানতে রাজি নন তিনি।
এই ওয়েবসাইটের বেশ কয়েকটি ছবি থেকেও এই বিষয়টি বেশ পরিষ্কার হয়ে যায়, ছবিগুলির আলোর উৎস সূর্য্যের আলোই।
নিউ স্ট্রেইটস টাইমস -এর ওয়েবসাইটেও ২০১৬ সালে নেগ্রি সেম্বিযান পাস্ উলামা কাউন্সিল- এর প্রধানের মৃত্যুর খবরটি প্রকাশ হয়েছিল। সেখানে মালয়েশিয়ার সিকামত অঞ্চলের একটি কবরখানায় তাকে কবর দেওয়া হয়েছে বলে লেখা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় কোরানের হাফেজকে মাটি দেয়ার সময় কবর আলোকিত হয়ে যায়।
ভাইরাল দাবিটি বিভ্রান্তিকর। প্রথমত কবরে মাটি দেওয়ার ছবিগুলি ইন্দোনেশিয়ার নয়, মালয়েশিয়ার। এখানে কবর কোনো অলৌকিক কারণে আলোকিত হয় নি। ছবির এই অস্বাভাবিক আলোর কারণ সূর্য্যের আলো এবং ক্যামেরার লেন্সে তার প্রতিফলন।