না, তৃণমূল সরকার জ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টার গড়তে সিপিএমকে জমি দেয়নি

রাজারহাটে প্রস্তাবিত জ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টার নিয়ে বিভ্রান্তিকর দাবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়াতে

Advertisement
না, তৃণমূল সরকার জ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টার গড়তে সিপিএমকে জমি দেয়নিজ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টারের জমি কে দিয়েছে?

৮ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ১০৮তম জন্মবার্ষিকী। আর, তাঁকে নিয়ে এবার সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি পোস্ট ভাইরাল হলো। 

এক ফেসবুক ব্যবহারকারী দাবি করছেন, "একদিন যার নির্দেশে মমতা ব্যানার্জির উপর অকথ্য অত্যাচার হয়েছিল সেই জ্যোতি বসুর নামে মেমোরিয়াল তৈরির জন্য পাঁচ একর জমি সিপিএম-কে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"

FB

একই দাবি সহ পোস্টের আর্কাইভ দেখুন এখানেএখানে।    

ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে এই পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর।

তদন্তে নেমে আমরা দেখতে পাই যে এই ফেসবুক ব্যবহারকারী এই পোস্টে প্রতিদিন সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদনের লিঙ্ক উল্লেখ করেছেন।

Pratidin

প্রতিবেদনটির একটি জায়গায় বলা হচ্ছে, "এটি (পড়ুন জমিটি) কেনা হয়েছে ‘জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোশ্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চে’র নামে। এই ট্রাস্টের সচিব রবীন দেব। এতে আছেন বিমান বসু-সহ বিশিষ্ট নেতারা।" 

তার মানে সরকার জমিটি দান করেননি। জমিটি কেনা হয়েছে। 

এটিকে সূত্র ধরে আমরা এবার কিওয়ার্ড সার্চ করি। দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের জুলাই প্রকাশিত দ্য হিন্দু পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই জমির বিষয়ে কথা বলতে সুজন চক্রবর্তী, রবিন দেব ও অশোক ভট্টাচার্য সম্মিলিত একতো দল দেখা করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জমি হস্তান্তর করার আশ্বাস দিয়েছেন। 

Jyoti Basu

এই প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার এই জমিটি জ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টারের জন্য বরাদ্দ করেছিল। এর ঠিক পাঁচ মাস বাদে এই জমি কেনার পুরো খরচ, অর্থাৎ ৪.১৫ কোটি টাকা, সরকারকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের ফলে এই জমি অধিগ্রহন সম্ভব হয়নি। 

২০২১ সালে দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকাও ছবি সহ একটি প্রতিবেদনে  দাবি করেছে যে জমি হস্তান্তর হয়ে গিয়েছে। 

Advertisement

Jyoti Basu

 

অর্থাৎ, জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়াও এক বছর আগে সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে।   

আমরা ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত বিমান বসুর একটি লেখাতে এই রিসার্চ সেন্টারের উল্লেখ পাওয়া যায়।  এখানে বলা হচ্ছে, জ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টারের জন্য জমি দিতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছে সরকার।  ১৭ই জানুয়ারি থেকে এই সেন্টার নির্মাণের জন্য অর্থ সংগ্রহ শুরু হয়েছে। 

বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে এবার আমরা বর্ষীয়ান বামফ্রন্ট নেতা রবিন দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করি। 

"২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার জমিটি ট্রাস্টকে হস্তান্তর করেছিল। কিন্তু সরকার এই জমি আমাদের দিয়েছে এই দাবি ঠিক নয়। ২০১১ সালে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা খরচ করে এই জমি কেনা হয়েছিল," রবিন দেব আজতককে জানালেন।  

সুতরাং, এই পোস্টের দাবি যে বিভ্রান্তিকর তা বলাইবাহুল্য।

ফ্যাক্ট চেক

A facebook user

দাবি

একদিন যার নির্দেশে মমতা ব্যানার্জির উপর অকথ্য অত্যাচার হয়েছিল সেই জ্যোতি বসুর নামে মেমোরিয়াল তৈরির জন্য পাঁচ একর জমি সিপিএম-কে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ফলাফল

রাজ্য সরকার জ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টারের জন্য কোনও জমি দেয়নি। ২০১১ সালে এই ট্রাস্ট তৈরি করে ৪.১৫ কোটি টাকা ব্যয় করে রাজারহাটে পাঁচ একর কওমি কেনা হয়েছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
A facebook user
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement