ফ্যাক্ট চেক: বিহারে শ্লীলতাহানির ২০২১ সালের ভিডিও উত্তর প্রদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে ভাইরাল

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই ঘটনাটি উত্তর প্রদেশ নয় বরং বিহারে ২০২১ সালে ঘটেছিল। এবং এই ঘটনায় আক্রান্তদের পরিচয় বা বর্ণ জানা যায়নি। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বিহারে শ্লীলতাহানির ২০২১ সালের ভিডিও উত্তর প্রদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে ভাইরাল

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় চাঞ্চল্যকর দাবিতে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে কয়েকজন পথচলতি যুবককে বাইকে থাকা এক যুগলের মধ্যে থাকা মহিলার শ্লীলতাহানি করতে দেখা যাচ্ছে। 

ভি়ডিওটি পোস্ট করে একে উত্তর প্রদেশের ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হচ্ছে যে, উচ্চবর্ণের এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় এই হরিজন সমাজের যুগলকে এভাবে অপদস্থ করা হয়েছে। ভিডিও-র এক পর্যায়ে কোনও মতে বাইকে পালিয়ে তারা নিজেদের রক্ষা করছে।

ভিডিওটি শেয়ার করে এর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "স্তন ছিঁড়ে দিয়ে শ্লীলতাহানি করে দেওয়ার ফতোয়া আছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে । উচ্চবর্ণের এলাকা দিয়ে যাতায়াতের পথে দলিত হরিজন সম্প্রদায়ের স্বামী স্ত্রী সেটাই অনুভব করলো । ভিডিও ও শব্দ গুলো বন্ধ না করেই পোষ্ট করলাম , আমার সোনার বাংলার মা , বোনেরা ক্ষমা করবেন।" 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই ঘটনাটি উত্তর প্রদেশ নয় বরং বিহারে ২০২১ সালে ঘটেছিল। এবং এই ঘটনায় আক্রান্তদের পরিচয় বা বর্ণ জানা যায়নি। 

যেভাবে জানা গেল সত্যি

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে কিফ্রেম সংগ্রহ করে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে দেখা যায় ওই একই ভিডিও ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর এক ব্যবহারকারী নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিলেন। যা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে ভিডিওটি এখনকার নয় বরং প্রায় চার বছর পুরনো। 

ভিডিওটি পোস্ট করে সে সময় ক্যাপশনে হিন্দিতে লেখা হয়েছিল যে বিহারে প্রকাশ্যে এসব হচ্ছে। এরপরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে ২০২১ সালের ৬ অক্টোবরের একটি দৈনিক জাগরণে প্রকাশিত রিপোর্ট পাওয়া যায়। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে বিহারের সারন জেলায়। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর, এর ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এরপর পুলিশ দরিয়াপুর এলাকা থেকে ঘটনার সাথে জড়িত চার যুবককে গ্রেপ্তার করে।  

Advertisement

দৈনিক ভাস্করের একটি রিপোর্ট অনুসারে, নির্যাতিতা মহিলা তাঁর পুরুষ বন্ধুর সাথে বাইকে করে আমনৌর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে লক্ষ্মণ চক নামক একটি জায়গার  কাছে একটি নির্জন রাস্তায় কিছু লোক তাদের দুজনকে একে অপরের সঙ্গে কিছু অশ্লীল কাজ করতে দেখে। এর পর ওই ব্যক্তিরা সেই মহিলার সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করে এবং পুরো ঘটনার একটি ভিডিও তৈরি করে ভাইরাল করে দেয়।  

'লাইভ হিন্দুস্তান'-এর ইউটিউব চ্যানেলে আমরা সারানের এসপি সন্তোষ কুমারের একটি ভিডিও পাই। তিনি বলেন, এটি দরিয়াপুর থানা এলাকার একটি ঘটনা যেখানে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, ভুক্তভোগী নারী ও পুরুষকে শনাক্ত করা যায়নি কারণ তারা এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। স্বাভাবিকভাবেই, তাদের নাম না জানা যাওয়ার কারণে তাঁরা উচ্চ নাকি নিম্ন বর্ণের ছিলেন তা নির্ধারণ করাও সম্ভব নয়। 

৬ অক্টোবর ২০২১-এর জাগরণের প্রতিবেদন অনুসারে, পুলিশ এই মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগে রাকেশ কুমার, আমোদ কুমার, অরবিন্দ কুমার এবং নীতিশ কুমারকে গ্রেপ্তার করেছিল। একই সময় SIT টিম বাকি দুই অভিযুক্ত, ধর্মেন্দ্র কুমার এবং গুড্ডু রাইকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছিল।   

এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে ২০২১ সালে বিহারে ঘটা একটি ঘটনাকে বর্তমানে উত্তর প্রদেশের ঘটনা দাবি করে কোনও প্রমাণ ছাড়ায় জাতপাতের দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর। 

ফ্যাক্ট চেক

Facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে উত্তর প্রদেশে উচ্চবর্ণের এলাকা দিয়ে দলিত হরিজন বর্ণের স্বামী-স্ত্রী যাওয়ার স্ত্রী-র শ্লীলতাহানি করা হয়।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওটি ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরের, ঘটনাটি বিহারের সারন জেলার। এই যুগলের কোনও পরিচয় জানা যায়নি, পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement