ফ্যাক্ট চেক: জ্যোতি মালহোত্রাকে গণপিটুনি দেওয়ার দাবিতে ছড়ানো হচ্ছে বাংলাদেশের ভিডিও 

পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা ২২ মে আদালতে হাজির হন । হিসার জেলা আদালত ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে আরও চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে। 

এই আবহে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করছেন যে জ্যোতি মালহোত্রাকে হাতের কাছে পেয়ে জনগণ তাকে গণপিটুনি দিয়েছে। আলোচ্য ভিডিওতে এক মহিলাকে কয়েকজন পুরুষ ঘিরে তার চুল টেনে তাকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। 

ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "দেশবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত জ্যোতি মালহোত্রা পাবলিক ভালো মতন করে ট্রিটমেন্ট দিচ্ছে। এরকম আমার আপনার আশে পাশে দেশবিরোধী আছে তাদেরকে ও ট্রিটমেন্ট দাওয়াই দরকার আছে। জানে না তো জনতার বাটাম কি জিনিস।"

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল ভিডিওটি ভারতের নয় বরং বাংলাদেশের একটি পৃথক ঘটনার এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে 

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে এই একই দৃশ্য-সহ হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার একটি খবর পাওয়া যায় যা ২০২৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়েছিল। ভাইরাল ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট এতে দেখা যাচ্ছে। 

এই খবরে বলা হয় যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি যখন উন্মত্ত জনতা ভেঙে ফেলছিল, তখন ওই মহিলা এই কাজে আপত্তি জানিয়ে বলেছিলেন যে এই বাড়ি ভাঙা ঠিক হয়নি। সেই কথা বলার কারণেই লোকজন ওই মহিলাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করতে থাকেন। টানা হয় চুলের মুঠি ধরে। ছোড়া হয় ইট-পাটকেল। 

এই একই ঘটনার ভিডিও বাংলাদেশী সংবাদ মাধ্যম কালবেলা নিউজের ইউটিউব চ্যানেলেও পাওয়া যাবে যা ২০২৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আপলোড করেছিল। পাশাপাশি আজকের পত্রিকার মতো বাংলাদেশী সংবাদ মাধ্যমে এই সংক্রান্ত খবরও প্রকাশ পেয়েছিল। সেখানে লেখা হয় যে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় ওই মহিলাকে হেনস্থা করা হয়। 

প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শহরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি ধানমন্ডি ৩২ ভেঙে ফেলে উন্মত্ত জনতা। কিন্তু এই কাজের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করায় ওই মহিলাকে লাঞ্ছিত হতে হয়েছিল। 

ফলে স্পষ্টতই বলা যায় যে একটি অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও পোস্ট করে জ্যোতি মালহোত্রাকে মারধরের দাবি করা হয়েছে যা ভিত্তিহীন।