ফ্যাক্ট চেক: বাংলাদেশ আর্মির হাতে ‘RAW’-এর চার এজেন্ট গ্রেফতারের দাবিটি ভিত্তিহীন

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে ভারতের চারজন ‘RAW’ এজেন্ট গ্রেফতার হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। অন্যদিকে ভাইরাল পোস্টকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটি ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট বাংলাদেশের নেত্রকোণায় অবৈধভাবে ভারতীয় চিনি পাচারের অভিযোগে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৪ ব্যক্তির।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বাংলাদেশ আর্মির হাতে ‘RAW’-এর চার এজেন্ট গ্রেফতারের দাবিটি ভিত্তিহীন

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টকার্ড বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে বেশ কয়েকজন সেনা সদস্যকে ৪ ব্যক্তিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে তাদের সামনে পড়ে রয়েছে একাধিক বস্তা ভর্তি কোনও সামগ্রী। পোস্ট কার্ডটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তরফে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘RAW’-এর চারজন এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল পোস্টকার্ডটি শেয়ার করে সেটির উপরে লিখেছেন, “ভারতীয় চার RAW এজেন্ট বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর হাতে আট ক।” পাশাপাশি পোস্টকার্ডে তারিখ হিসাবে ২০২৫ সালের ১০ মার্চ উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “ভারতীয় র এর অস্তিত্ব বাংলাদেশে টিকিয়ে রাখলে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য  হুমকি, এদের শিকড়  তুলতে হবে এই দেশ থেকে।”

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে ভারতের চারজন ‘RAW’ এজেন্ট গ্রেফতার হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। অন্যদিকে ভাইরাল পোস্টকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটি ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট বাংলাদেশের নেত্রকোণায় অবৈধভাবে ভারতীয় চিনি পাচারের অভিযোগে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৪ ব্যক্তির।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

প্রথমত, ভাইরাল পোস্টকার্ডের দাবিটি সন্দেহজনক। কারণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘RAW’-এর কোনও এজেন্ট গ্রেফতার বা আটক হলে সেই সংক্রান্ত খবর অবশ্যই প্রথম শ্রেণির ভারতীয় ও বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলিতে প্রকাশিত হবে। কিন্তু আমরা আমাদের অনুসন্ধানে এমন কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাইনি যা থেকে এর সত্যতা প্রমাণ হয়। এর থেকে অনুমান করা যায় ভাইরাল ছবিটির পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে। 

এরপর পোস্টকার্ডে ব্যবহৃত ছবির আসল রহস্য সম্পর্কে জানতে সেটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। তখন ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট প্রথম শ্রেণির বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম দৈনিক ইনকিলাবের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এই একই ছবি-সহ একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, নেত্রকোণা জেলায় বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর একটি টিম দূর্গাপুরের আত্রাই খালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৮ বস্তা ভারতীয় চিনি সহ ৪ জন চিনি চোরাচালানকারীকে আটক করেছে।  

Advertisement

প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি টিম রবিবার গভীর রাতে জেলার দূর্গাপুর উপজেলা আত্রাই খালী বাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৮ বস্তা ভারতীয় চিনি সহ ৪ চোরাকারবারিকে আটক করেছে। আটককৃত চিনির আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। চিনি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার জন্য আটককৃত ৪ চোরাকারবারি নাম প্রকাশ করা হয়নি। সোমবার দুপুরে ৫৮ বস্তা ভারতীয় চিনি সহ আটককৃত ৪ জন চোরাচালানকারীকে ৩১ বিজিবি এর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।” 

অপর দুই বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম নেত্রকোণা জার্নাল ও আমার সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনেও এই একই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কোনও প্রতিবেদনেই ধৃতদের ভরতীয় নাগরিক কিংবা ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘RAW’-এর এজেন্ট বলে উল্লেখ করা হয়নি। 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, অন্য ঘটনার পুরনো ছবি শেয়ার করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে ভারতের চারজন ‘RAW’ এজেন্ট গ্রেফতার বলে মিথ্যে ও ভিত্তিহীন দাবি করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ছবিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে ভারতের চারজন ‘RAW’ এজেন্ট গ্রেফতারের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। 

ফলাফল

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে ভারতের চারজন ‘RAW’ এজেন্ট গ্রেফতার হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। ছবিটিতে ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট বাংলাদেশের নেত্রকোণায় অবৈধভাবে ভারতীয় চিনি পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার ৪ জনকে দেখা যাচ্ছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement