ফ্যাক্ট চেক: মধ্যপ্রদেশে নিম্ন বর্ণের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে বাধা উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের? ভিডিও-র সত্যতা জানুন

আজতক ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে জাতিগত বৈষম্যের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং গত ২৮ মার্চ মধ্য প্রদেশের সিধি জেলায় রাস্তার উপরে বাইক রাখাকে কেন্দ্র করে দুই মাদকাসক্ত যুবক ওই স্কুল-ভ্যানে হামলা চালায়। এই ঘটনার দুই অভিযুক্তই নিম্ন বর্ণের হিন্দু।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: মধ্যপ্রদেশে নিম্ন বর্ণের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে বাধা উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের? ভিডিও-র সত্যতা জানুন

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে দুই যুবক একটি স্কুল-ভ্যানে হামলা চালাচ্ছে ও ভ্যানের কাঁচ ভাঙছে। অন্যদিকে এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে গাড়ির ভিতরে থাকা স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাদের কাঁদতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, মধ্য প্রদেশের সিধি জেলায় নিম্ন বর্ণের হিন্দু বাচ্চাদের স্কুলে না যেতে দেওয়ার জন্য তাদের গাড়িতে উচ্চ বর্ণের যুবকরা হামলা চালিয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “এটা আর ভারত নেই, এ যেন #আতঙ্কবাদিদের পিঠ স্থান। ওহে ছোটো জাতের হিন্দু! শিক্ষা তোমার অধিকার নয়। তোমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ কর।ছোটো ছোটো শিশু ভর্তি স্কুল গাড়িতে ইঁট দিয়ে আক্রমণ !! আতঙ্কিত শিশু শিক্ষার্থীরা। বিজেপির ডবল ইঞ্জিন পরিচালিত মধ্যপ্রদেশের সিন্ধি জেলার ঘটনা।” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে জাতিগত বৈষম্যের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং গত ২৮ মার্চ মধ্য প্রদেশের সিধি জেলায় রাস্তার উপরে বাইক রাখাকে কেন্দ্র করে দুই মাদকাসক্ত যুবক ওই স্কুল-ভ্যানে হামলা চালায়। এই ঘটনার দুই অভিযুক্তই নিম্ন বর্ণের হিন্দু।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল দাবি ও ভিডিও-র সত্যতা জানতে সেটির কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে গত ২ এপ্রিল নিউজ ১৮ ভাইরালের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে এর শিরোনাম ও বিস্তারিত অংশ উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্য প্রদেশের সিধি জেলার মাসুরিহা এলাকায় রাস্তা থেকে সরে যেতে বলায় একটি স্কুল ভ্যানে হামলা চালায় মাদকাসক্ত যুবকরা। 

Advertisement

এরপর উক্ত সূত্র ধরে এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করলে গত ২ এপ্রিল টিভি-৯ হিন্দির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ভাইরাল ভিডিওর একাধিক স্ক্রিনশট-সহ এই সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৮ মার্চ মধ্য প্রদেশের সিধি জেলার নেবুহান গ্রামে স্কুল গাড়িতে করে বাচ্চাদের নিয়ে যাচ্ছিলেন চালক ওম প্রকাশ গুপ্ত। সেই সময় একটি বাইক-সহ রাস্তার উপরে দুই মদ্যপ যুবককে পড়ে থাকতে দেখলে তিনি তাদের রাস্তা থেকে সরে যেতে বলেন। এরপরই ওই দুই অভিযুক্ত রাজা সাকেত এবং চরকু সাকেত উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং স্কুল গাড়িতে হামলা চালায় ও ঘুষি মেরে গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেয়। 

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই ঘটনার খবর পেয়ে সিধির এসপি ডঃ রবীন্দ্র ভার্মা সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় জামোদি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক দিব্যা প্রকাশ ত্রিপাঠিকে ঘটনাস্থলে পাঠান। স্কুল-ভ্যান চালক ওম প্রকাশ গুপ্তের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই দুই অভিযুক্ত রাজা সাকেত এবং চরকু সাকেত গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করলে বিচারক তাদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তবে কোনও প্রতিবেদনেই এই ঘটনার সঙ্গে জাতিগত বৈষম্যের কোনও সম্পর্ক উল্লেখ করা হয়নি।

এরপর বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমরা সিধির এসপি ডঃ রবীন্দ্র ভার্মার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, "এই ঘটনাটি কোনও বর্ণ বৈষম্যের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। বরং রাস্তায় সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদের জেরে ওই দুই যুবক রাজা সাকেত এবং চরকু সাকেত স্কুল ভ্যানটিতে হামলা চালায়। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে এবং তাদের দু’জনের কেউই উচ্চ বর্ণের মানুষ নয় বরং নিম্ন বর্ণের (এসসি) হিন্দু।" বিষয়টি সম্পর্কে জানতে আমাদের তরফে আজ তকের সিধি জেলার সাংবাদিক হরিওম সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও আমাদের এই একই তথ্য প্রদান করেন।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, রাস্তায় সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে হওয়া বিবাদের ভিডিও মিথ্যে জাতিগত বৈষম্যের রং লাগিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভিডিওতে মধ্য প্রদেশের সিধি জেলায় নিম্ন বর্ণের হিন্দু বাচ্চাদের স্কুলে না যেতে দেওয়ার জন্য তাদের গাড়িতে উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের হামলা চালাতে দেখা যাচ্ছে।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে জাতিগত বৈষম্যের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং গত ২৮ মার্চ মধ্য প্রদেশের সিধি জেলায় রাস্তার উপরে বাইক রাখাকে কেন্দ্র করে দুই মাদকাসক্ত যুবক ওই স্কুল-ভ্যানে হামলা চালায়। এই ঘটনার দুই অভিযুক্তই নিম্ন বর্ণের হিন্দু।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement