
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রায় এক মাসের মাথায় সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদল। তার পরপরই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও কাশ্মীরের একাধিক এলাকা ঘুরে আসেন। সেই সূত্র ধরে এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট বেশ ভাইরাল হচ্ছে।
সেই পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, পহেলগাঁও হামলার একমাস কেটে যাওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল কাশ্মীর গিয়ে দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডা কেউই কাশ্মীরে যাননি।
এই পোস্টে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল ও রাহুল গান্ধীর একটি ছবি যোগ করে লেখা হয়েছে, "পাহেলগাঁও হামলার পর এই ১ মাস কাশ্মীরের পুঞ্জ সহ অনেক এলাকায় দূর্গতদের দেখতে বিজেপি সরকারের নাড্ডা, শাহ, উনিজী কেউ আসার সাহস পাননি কিন্তু পৌঁছেছেন তৃনমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা বুকে দম থাকা চাই বুঝলেন যেটা বিজেপির নেই।"
আজতক ফ্যাক্ট চেকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে দাবিটি অর্ধসত্য এবং বিভ্রান্তিকর। নরেন্দ্র মোদী বা জেপি নাড্ডা পহেলগাঁও হামলার পর কাশ্মীরে না গেলেও অমিত শাহ হামলার পরদিনই কাশ্মীরে গিয়েছিলেন।
সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে
এই বিষয়ে একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করে এমন কোনও প্রমাণ বা খবর পাওয়া যায়নি যা থেকে প্রমাণ হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডা সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। তবে পহেলগাঁও হামলার পরেরদিনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাশ্মীরে গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছিলেন। এ কথাটি ভাইরাল পোস্টে প্রকাশ করা হয়নি।
এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে একাধিক নিউজ রিপোর্টও পাওয়া যায়। যেমন ২০২৫ সালের ২৩ এপ্রিল প্রকাশিত হিন্দুস্তান টাইমসের একটি রিপোর্টে জানা যায় যে পহেলগাঁও হামলার পরের দিন অমিত শাহ হামলার স্থানে গিয়েছিলেন। সেই রিপোর্টে থাকা ছবিতে অমিত শাহকে সেনা কর্তাদের সঙ্গে হামলার স্থান ঘুরে দেখতে দেখা যায়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, জঙ্গি হামলায় আহতের সঙ্গে তিনি দেখা করেন। এর পাশাপাশি হামলায় নিহত পর্যটকদের শেষ শ্রদ্ধ জানান।
সেই সঙ্গে তিনি জঙ্গি হামলায় মৃত পর্যটকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে তাদের সমবেদনা জানান। এই বিষয়ে ডিডি নিউজের একটি প্রতিবেদন এখানে দেখা যাবে।
সেই সঙ্গে অমিত শাহের সঙ্গে নিহতদের পরিবারের সাক্ষাতের ভিডিও এনডিটিভি-সহ একাধিক চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়। যা নীচে দেখা যাবে।
সুতরাং, পহেলগাঁও হামলার পর নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, বা জেপি নাড্ডাদের মধ্যে কারোর কাশ্মীর না যাওয়ার দাবিটি অর্থসত্য এবং বিভ্রান্তিকর।
পহেলগাঁও হামলার পর তৃণমূল এবং কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা কাশ্মীরে গেলেও নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, বা জেপি নাড্ডা কেউ যাননি।
অমিত শাহ গত ২৩ এপ্রিলই হামলার স্থলে যান এবং নিহতদের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন।