জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বকে বড় সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। অদূর ভবিষ্যতে সমদ্রগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে ব্যাংকক, ঢাকা, জাকার্তা, মুম্বই, লন্ডন, লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক-এর মত মেগা সিটিগুলি।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বকে দেওয়া এক সতর্কবার্তায় রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব বলেন, মুম্বই এবং নিউ ইয়র্কের মতো বড় শহরগুলিতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে গুরুতর বিপদের মুখে পড়তে পারে এই শহরগুলি। বিশ্ববাসীকে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় আরও বেশি তৎপর হতে হবে।
সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি বড় বিপদের আভাস দিতে চলেছে। গুতেরেস বলেন, ‘তিন হাজার বছরের মধ্যে যে কোনও পূর্ববর্তী শতাব্দীর তুলনায় ১৯০০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী গড় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গত ১১ হাজার বছরের যে কোনও সময়ের থেকে গত শতাব্দীতে বিশ্ব মহাসাগর দ্রুত উষ্ণ হয়েছে। উচ্চতা যেভাবে বাড়ছে তাতে তলিয়ে যেতে পারে বিশ্বের একাধিক মেগা শহর।
বড় বড় শহরগুলি বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কায়রো, লাগোস, মাপুটো, ব্যাংকক, ঢাকা, জাকার্তা, মুম্বাই, সাংহাই, কোপেনহেগেন, লন্ডন, লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউ ইয়র্ক, বুয়েনস আইরেস এবং সান্তিয়াগো।
উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী প্রায় ৯০০ মিলিয়ন মানুষের জন্য চূড়ান্ত বার্তা শুনিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, কিছু উপকূলীয় অঞ্চলে ইতিমধ্যেই সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় বৃদ্ধির হার তিনগুণ বেড়েছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ২০১৩ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রতি বছর গড়ে ৪.৫ মিমি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এই জলেক স্তর সব জায়গায় সমানভাবে বাড়ছে না।
যে গতিতে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে তাতে ছোট দ্বীপগুলির জন্য বড় বিপদ। শুধু তাই নয়, ভারত, চিন, নেদারল্যান্ডস এবং বাংলাদেশও এর থেকে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, কারণ এই দেশগুলির একটি বিশাল জনগোষ্ঠী উপকূলীয় অঞ্চলের আশেপাশে বসবাস করে।
ক্রমবর্ধমান লবণাক্ততা সামুদ্রিক জীবের জীবনকেও বিপন্ন করছে। সেইসঙ্গে পর্যটনকে প্রভাবিত করছে। যার সবগুলোরই ওপর অর্থনীতি নির্ভর করে।
বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে না দিলেও আগামী দু হাজার বছরে সমুদ্রের উচ্চতা প্রতি বছর গড়ে ২ থেকে ৩ মিটার বাড়বে।