খাসির মাংসের সঙ্গে বাঙালির সম্পর্ক শতাব্দী প্রাচীন। আর কষা মাংস হলে তো কথাই হবে না। অল্প আঁচে অনেকক্ষণ ধরে রান্না করা গ্রেভি লেগে থাকা এক টুকরো মাংসের স্বাদের সঙ্গে অন্য কোনও কিছুর তুলনা চলবে না। কষা মাংস (Kosha Mangsho) বাঙালির রবিবারের মধ্যাহ্নভোজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি এমন একটি খাবার, যা অবাঙালিরাও সমানভাবে পছন্দ করে। এই কলকাতা শহরে আনাচে-কানাচে প্রচুর হোটেল ও রেস্তরাঁ রয়েছে। সবকটিতেই কম-বেশি কষা খাসির মাংস পাওয়া যায়। তবে কয়েকটি রেস্তরাঁর রান্নার পদ্ধতিটাই একটু আলাদা। যার কারণে সেখানকার মাংসের টেস্ট একেবারে লা জাবাব।
আমরা এই প্রতিবেদনে কলকাতার কয়েকটি সেরা রেস্তরাঁর খোঁজ দেব। যেখানকার কষা মাংস (Kosha Mangsho) আপনাকে অবশ্যই টেস্ট করতে হবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই রেস্তরাঁগুলির ঠিকানা (Best Kosha Mangsho In Kolkata)।
আরও পড়ুন: Best Kochuri Shop In kolkata: শীতের সকালে ধোঁয়া ওঠা ফুলকো কচুরি খুঁজছেন? কলকাতার ৮ সেরা দোকানের হদিশ
গোলবাড়ি (Golbari'r Kosha Mangsho): এই প্রাচীন রেস্তরাঁটি শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে অবস্থিত। অনেকেই দাবি করে যে এখান থেকেই নাকি কষা মাংসের উৎপত্তি হয়েছিল। গোলবাড়ি মূলত পাঞ্জাবি রেস্তরাঁ হিসেবে পথচলা শুরু করেছিল। পরে গোলবাড়ি নামে নামকরণ করা হয়েছিল। এই রেস্তরাঁটি ৯৫ বছরের বেশি পুরনো এবং সবচেয়ে মশলাদার বাঙালি মাটন কারি বা কষা মাংস পরিবেশন করে।
কষে কষা (Koshe Kosha): নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এই ব্র্যান্ডের রেস্তরাঁটি ২০০৬ সালে উত্তর কলকাতার হাতিবাগানে শুরু হয়েছিল। ২০০৬ গোলবাড়ির কিছু পুরনো কর্মচারী নিয়ে এই রেস্তরাঁটি শুরু হয়েছিল। এখানকার কষা মাংসের স্বাদ আপনার মুখে চিরকাল লেগে থাকবে।
ওহ! ক্যালকাটা (Oh! Calcutta): খাবারের প্রতি বাঙালিদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে এই চমৎকার বাঙালি রেস্তরাঁটি। এরা নানা স্টাইলে বাঙালি খাবার পরিবেশন করে। তবে কষা মাংসের স্বাদ বাঙালিদের পছন্দ অনুযায়ীই হয়। এক প্লেট নিখুঁত কষা মাংস খেতে হলে আপনাকে এই রেস্তরাঁতে আসতেই হবে।
ভজহরি মান্না (Bhojohori Manna): এই রেস্তরাঁর নাম শুনলেই মনে পরে যায় মান্না দে’র গান ‘আমি শ্রী শ্রী ভজহরি মান্না’। এটি কলকাতার সেরা বাঙালি রেস্তরাঁ চেইনের মধ্যে অন্যতম। গড়িয়াহাট, হাতিবাগান, সল্টলেক, অনেক জায়গাতেই এদের আউটলেট রয়েছে। এখানে বাঙালি খাবারের বহু রকমের সম্ভার পাবেন। তবে, অবশ্যই ট্রাই করবেন মাটন কষা।
আহেলী (Aaheli Restaurant): এই রেস্তরাঁটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালে। বাংলার অভিজাত খাবারগুলি পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে প্রাথমিক ভাবে এই রেস্তরাঁর পথচলা শুরু হয়। সেরা বাঙালি খাবার খেতে সব বয়সের ভোজনবিলাসী এখানে আসেন নিয়মিত। এখানকার কষা মাংস খুবই জনপ্রিয়।
কস্তুরী (Kasturi Restaurant): পঁচিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই রেস্তরাঁ সেরা বাঙালি খাবার পরিবেশন করে আসছে। কচুপাতা চিংড়ি এখানকার একটি বিশেষ জনপ্রিয় একটি পদ। তবে এখানকার কষা মাংসও অবশ্যই ট্রাই করতে হবে।
কিউপাইস (Kewpie's): শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কিউপাইস হল বুটিক রেস্তরাঁ। কলকাতা শহরে এরাই এই ধরনের রেস্তরাঁ প্রথম খোলে। ছোট হলেও এদের রান্নার স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো। কষা মাংসের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। একেবারে ঘরোয়া স্টাইলে রান্না করা হয় খাসির মাংস। ছোট মাটির বাটিতে পরিবেশন করা হয়।
৬ বালিগঞ্জ প্লেস (6 Ballygunge Place): এই রেস্তরাঁর নিজস্ব কষা মাংসের বৈচিত্র রয়েছে, যা আবার খুব ঘরোয়া শৈলীতে ভরপুর। স্বাদে খুব বেশি সমৃদ্ধ নয়, তবে সমস্ত মশলার সঠিক স্বাদ আপনি ওই মাংসের মধ্যেই পাবেন। যদিও ৬ বালিগঞ্জ প্লেসে আরও অনেক সিগনেচার ডিশ রয়েছে, তবে এখানকার কষা মাংস অবশ্যই ট্রাই করবেন।
যোলো আনা বাঙালি (Sholoana Bangali): প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের এই রেস্তরাঁটিও এখন বাঙালি খাবারের সেরা গন্তব্য। নানা বাঙালি পদের ভিড়ের মধ্যে কষা মাংস অবশ্যই ট্রাই করবেন।