Birbhum Violence : বাংলায় বিরোধী-দাবি ৩৫৫ ধারা, রাষ্ট্রপতি শাসনের সঙ্গে পার্থক্য কী?

Birbhum Violence : বীরভূমের রামপুরহাটের গত ২১শে মার্চ তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের হত্যার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ জনতা ৫টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, এতে ২ শিশুসহ ৮ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান। এরপর থেকেই চাপা উত্তেজনা ছড়িয়ে রয়েছে বীরভূমে।

Advertisement
বাংলায় বিরোধী-দাবি ৩৫৫ ধারা, রাষ্ট্রপতি শাসনের সঙ্গে পার্থক্য কী?মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি
হাইলাইটস
  • বাংলায় বিরোধী-দাবি ৩৫৫ ধারা
  • রাষ্ট্রপতি শাসনের সঙ্গে পার্থক্য কী?
  • জানুন বিস্তারিত তথ্য

Birbhum Violence : পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে ঘটনার জেরে কংগ্রেস বাংলাতে ৩৫৫ ধারা কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে। লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি লিখে বাংলায় ৩৫৫ অনুচ্ছেদ কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন, যাতে রাজ্য সরকার সংবিধান অনুযায়ী কাজ করছে, তা নিশ্চিত করা যায়। বীরভূমের রামপুরহাটের গত ২১শে মার্চ তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের হত্যার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ জনতা ৫টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, এতে ২ শিশুসহ ৮ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান। এরপর থেকেই চাপা উত্তেজনা ছড়িয়ে রয়েছে বীরভূমে।

কী দাবি কংগ্রেসের

কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরী বীরভূমের ঘটনার জেরে ৩৫৫ ধারা কার্যকর করার দাবি তুলেছেন। রাষ্ট্রপতি কোবিন্দকে লেখা একটি চিঠিতে অধীর জানিয়েছেন, শুধুমাত্র গত মাসেই বাংলায় ২৬ জনকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। সহিংসতা ও ভয়ের কবলে গোটা রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে ৩৫৫ ধারা প্রয়োগ করা উচিত।

কিন্তু এই ৩৫৫ ধারা আদতে কী?

সংবিধান অনুসারে, জনশৃঙ্খলা এবং পুলিশ রাজ্যের বিষয়। কিন্তু ৩৫৫ ধারা কেন্দ্রকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা দেয়। ৩৫৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে বহিরাগত আগ্রাসন এবং অভ্যন্তরীণ গোলযোগের ক্ষেত্রে প্রতিটি রাজ্যকে রক্ষা করা কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব। ৩৫৫ অনুচ্ছেদ কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা দেয়। এর মাধ্যমে রাজ্যে সবকিছু সংবিধান অনুযায়ী চলছে কি না, তাও দেখার ক্ষমতা রাখে কেন্দ্র।

৩৫৬ ধারা অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির শাসন থেকে এটি কতটা আলাদা?

১৯৯৪ সালে, সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের বিষয়ে এসআর বোমাই বনাম কেন্দ্রীয় সরকারে রায় দেয় যে, কেন্দ্রীয় সরকার ৩৫৫ অনুচ্ছেদের সম্পূর্ণ ব্যবহার না করলে,৩৫৬ অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নের কথা ভাবা উচিত নয়। ৩৫৬ অনুচ্ছেদ ৩৫৫ এর পরে কার্যকর করা যেতে পারে, যার কারণে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন কার্যকর হয়। ৩৫৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে যখন জরুরি অবস্থা দেখা দেয়, তখন রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতির শাসন জারির সুপারিশ করতে পারেন।

Advertisement

রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয় কীভাবে?

  • যদি কোনো দল রাজ্য বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারে এবং বিধানসভা সেই দলের নেতা অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করতে না পারে।
  • যুদ্ধ, ভূমিকম্প, বন্যা বা মহামারীর মতো কোনও দুর্যোগের জেরে রাজ্যে যথাসময়ে বিধানসভা নির্বাচন যদি না হয়।
  • বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাবে সরকারের পতন হলে কিংবা কোনও দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হলে। 
  • রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি নিজে যদি মনে করেন, যে রাজ্য সরকার বা বিধানসভা সংবিধান অনুযায়ী কাজ করছে না।
  • আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রেও কি রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা যায়?
  • আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি হতে পারে। ৮০-এর দশকে যখন পাঞ্জাবে বিদ্রোহী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়, তখন ১৯৮৭ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে ৫ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছিল।
  • ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে, জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধির কারণে, সেখানে টানা ৬ বছর রাষ্ট্রপতি শাসন ছিল। পাঞ্জাবের পর এই দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রপতি শাসনের সর্বোচ্চ সীমা বাড়ানো হয়।
  • ১৯৭৩ সালে পুলিশ বিদ্রোহের কারণে উত্তর প্রদেশে ৫ মাস এবং ১৯৯২ সালে বাবরি ধ্বংসের পরে ১ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন কার্যকর ছিল।
  • ১৯৭৩ সালে অন্ধ্র প্রদেশে পৃথক রাজ্যের দাবিতে সহিংস বিক্ষোভ হয়েছিল। সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়, যা ১১ মাস বহাল ছিল।

কত দিনের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা যায়?

শুরুতে মাত্র ৬ মাসের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা যেতে পারে। তবে রাজ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে, সংসদের উভয় কক্ষের অনুমোদন নিয়ে তা বাড়ানো যেতে পারে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি যখন খুশি রাষ্ট্রপতি শাসন অপসারণ করতে পারেন।

POST A COMMENT
Advertisement