গ্রেফতারির সাড়ে ৮ ঘণ্টা পরে জামিন পেলেন কৌস্তুভ বাগচী। আদালত থেকে বেরোনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি দিলেন কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা। তিনি বলেন,'যতদিন না পশ্চিমবঙ্গ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎখাত করব, ততদিন মাথায় চুল গজাতে দেব না। কথা দিয়ে গেলাম। এর থেকে কঠিন লড়াই করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাতের ঘুম কেড়ে নেব।'
আদালতের বাইরেই মুণ্ডন করেন কৌস্তুভ। তার পর তিনি বলেন,'স্বৈরাচারি শাসক এই ধরনের কাজ করে। তাই কোর্টের সামনে বসে চুল কামালাম। যতদিন না পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাই ততদিন পর্যন্ত মাথায় চুল গজাতে দেব না।' মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কি ক্ষমা চাইবেন? কৌস্তুবের বক্তব্য, আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অধীর চৌধুরীর পায়ে ধরে ক্ষমা চান।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগে শুক্রবার গভীর রাতে কৌস্তুভের বারাকপুরের বাড়িতে যায় পুলিশ। ৫ ঘণ্টা পর সকাল ৮টায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, কৌস্তভের মন্তব্যের ভিত্তিতে বড়তলা থানায় লিখিত অভিযোগের কারণেই এই গ্রেফতার। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ৫০৪, ৫০৫, ৫০৬, ৫০৯, ৩৫৪এ এবং ১২০বি ধারায় আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিন কৌস্তুভকে জামিন দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত। তাঁকে এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয়। কৌস্তুভের পাশে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস এবং বাম আইনজীবীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন,' মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। কৌস্তভের পাশে আছি। তাঁর পরিবারকে রাত ৩টে থেকে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। যেন কোনও উগ্রপন্থীকে গ্রেফতার করতে যাচ্ছে। পথে নেমে প্রতিবাদ করবে কংগ্রেস।'
শনিবার গ্রেফতারির সময় কোন ধারায় গ্রেফতার করা হচ্ছে তাঁকে,সে নিয়েও পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় কৌস্তভের। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারির পর কৌস্তুভ বলেন,'বিনা কারণে আমায় হয়রান করা হচ্ছে। এখানে আইনের শাসন নয়, শাসনের আইন চলছে। মাতৃসমা মুখ্যমন্ত্রী পুত্রসম কৌস্তুভ বাগচীকে গ্রেফতার করাচ্ছেন, এটাই আমায় জয়। মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়ে গিয়েছেন।'
বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নাম না করে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে দীপক ঘোষের বইয়ের কথা তোলেন কৌস্তুভ। সেনিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারির সাড়ে আট ঘণ্টার মধ্যে জামিন পেলেন কৌস্তুভ।
আরও পড়ুন- ধাক্কা খেল পুলিশ, কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচীকে জামিন আদালতের