১৯৯৬ ব্যাচ-এর আইপিএস দময়ন্তী সেন এই রাজ্যের অন্যতম পরিচিত পুলিশ অফিসার। হাইকোর্ট একাধিক মামলায় তদন্তভার তাঁর হাতেই দিয়েছে। সেই দময়ন্ত্রী সেনকে কলকাতা পুলিশ থেকে আরও একবার বদলি করা হল। কলকাতার পুলিশের স্পেশাল কমিশনার (২) পদ থেকে দময়ন্তীকে পাঠানো হল রাজ্য পুলিশের এডিজি (প্রশিক্ষণ) পদে। ফলত গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল দাপুটে পুলিশ আধিকারিক দময়ন্তী সেনকে ৷
দময়ন্তী সেন রাজ্যের সবচেয়ে চর্চিত পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে অন্যতম। ২০১০ সালে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পদে ছিলেন দময়ন্তী সেন। সেসময় রোজভ্যালি সংস্থা সম্পর্কে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করেন তিনি। ২০১২ সালে পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডে তদন্তে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন আইপিএস দময়ন্তী সেন। তবে হঠাৎই তখন কলকাতা পুলিশ থেকে তাঁকে বদলি করে দেওয়া। ২০১২ সালে কলকাতা পুলিশ থেকে সরিয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের ডিআইজি পদে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে।একাংশের মতে, দময়ন্তী সেনের এই সক্রিয় ভূমিকা পসন্দ ছিল না তৎকালীন সরকারের। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর দময়ন্তীকে প্রায় ৭ বছর পরে কলকাতা পুলিশে ফেরত আনা হয়েছিল। সে সময় রাজ্য পুলিশের আইজি (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) পদ থেকে তাঁকে আনা হয়েছিল কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (৩) পদে। এবার ফের একবার কলকাতা পুলিশের শীর্ষ স্তর থেকে বদলি করে দেওয়া হলে দুঁদে আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেনকে।
আচমকাই কলকাতা পুলিশের বিশেষ নগরপালের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে কেন রাজ্য পুলিশের ট্রেনিং পদে পাঠানো হল দময়ন্তী সেনের মতো দক্ষ অফিসারকে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷ সম্প্রতি কালিয়াগঞ্জে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা, আলিপুরের রসিকা জৈন নামে এক গৃহবধূর খুনের ঘটনা থেকে শুরু করে একাধিক ধর্ষণকাণ্ডের তদন্ত করেছেন দময়ন্তী সেন ৷ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বিভিন্ন তদন্তের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি ৷ ২০২৮ সালে কাকদ্বীপে খুন হয় সিপিএম সমর্থক এক দম্পতি ৷ চলতি বছরে হাইকোর্ট সিট গঠন করে ওই ঘটনার তদন্তের দায়িত্বও দেয় দময়ন্তী সেনকে ৷ পরিসংখ্যান বলছে, গত দেড় বছরে হাইকোর্টের তৈরি করা SIT-এ ৯৮%-এর মাথায় রয়েছেন দময়ন্তী সেন। এরই মধ্যে ফের বদলি করে দেওয়া হল দময়ন্তীকে। বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, দময়ন্তী সেনের এই অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া ও তদন্ত প্রক্রিয়ায় গতি আনা মোটেও ভালো চোখে দেখা হচ্ছে না। মনে করা হচ্ছে, সেইরকম কোনও কারণেই কার্যত কলকাতা পুলিশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল দময়ন্তীকে ৷ তাঁকে পাঠানো হল রাজ্যে পুলিশের এডিজি ট্রেনিং পদে, যেটি তুলনামূলক অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ পদ ।এই বিষয়ে লালবাজারের কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক মন্তব্য করতে চাননি । প্রশাসনের শীর্ষ মহল থেকে আবার দাবি করা হচ্ছে এটা রুটিন বদলি ৷