৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার এই নজিরবিহীন নির্দেশ দিলেন তিনি। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় নিয়োগ পাওয়া ওই শিক্ষকদের আগামী চারমাসের মধ্যে চাকরি ছাড়তে হবে। নিয়োগ দুর্নীতিতে এত বিপুল পরিমাণ বাতিল আগে হয়নি।
ন’বছর আগের টেটের নিয়োগে বিপুল দুর্নীতি হয়েছে বলে আদালতে মামলা করেছিলেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তবে তিনি বলেছিলেন, এই প্যানেলের ৪২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু সবাই যে বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন তা নয়। কেউ কেউ পরীক্ষা দিয়ে মেধার ভিত্তিতেও চাকরি পেয়েছেন।
তিনি আদালতে বলেন, যাঁরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের বিষয়ে তদন্ত করা হোক। এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
অভিযোগ, মামলাকারীদের থেকে কম নম্বর পেয়েও চাকরি দেওয়া হয়েছে অনেককে। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্যানেলে ৮২৪ জনের নাম রয়েছে। মামলাকারীরা ইন্টারভিউ না দিয়েই তাঁদের থেকে বেশি নম্বর পেয়েছেন। ১৩৯ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়, চাকরি পেয়েছেন এমন অপ্রশিক্ষিতদের থেকে যাঁদের নম্বর বেশি। ৩০ হাজারের বেশি এমন প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে, যাঁদের নম্বর মামলাকারীদের থেকে কম। গত ডিসেম্বর মাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ১৩৯ জনের তালিকাটি খতিয়ে দেখার জন্য পর্ষদকে নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ২০১৬ সালে নিয়োগ হয়েছিল। সেখানে ৪২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৬ হাজারের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ। যাঁদের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হল অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, যাঁরা এতদিন ধরে বিভিন্ন স্কুলগুলিতে চাকরি করছিলেন, সেই স্কুলগুলির কী হবে? এক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টে থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, সম্প্রতি যে টেট পরীক্ষা হয়েছে, সেখান থেকে নিয়োগ করতে হবে। এদের মধ্যে একটি বড় সংখ্যক শিক্ষক, যাঁরা প্যারা টিচার হিসেবে কাজ করছিলেন, তাঁরা আপাতত চার মাস প্যারা টিচারের বেতন নিয়ে কাজ করবেন।
আরও পড়ুন-কুন্তলের চিঠি মামলা: অভিষেককে রক্ষাকবচ নয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশই বহাল হাইকোর্টে