মেট্রোর কাজে ময়দানে গাছ কাটা যাবে না, এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মেট্রোর কাজ চলছে। ওই কাজের জন্য ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সংলগ্ন ময়দান এলাকায় ৭০০ গাছ কাটা হবে। এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন কলকাতা’ নামে একটি সংগঠন। তাদের বক্তব্য, ময়দান এলাকা শহরের ফুসফুস। সেখানে এত গাছ কাটা হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে।
কলকাতা হাইকোর্ট বিষয়টিতে নির্দেশ দিয়েছে, মেট্রোর কাজের জন্য ময়দান এলাকায় নতুন করে কোনও গাছ কাটা যাবে না। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের পরিবেশ মন্ত্রকের বক্তব্য শুনতে চায় আদালত। তাদের হলফনামা জমা দিতে হবে। মামলায় রাজ্যের বন দফতরকে যুক্ত করতে হবে। গাছ কাটা নিয়ে তাদের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে বলে জানায় উচ্চ আদালত। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নেবে হাইকোর্ট। আগামী ১৯ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।
মেট্রোর কাজের বরাদ্দ প্রাপ্ত সংস্থা ‘রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড’ আদালতে জানায়, হাইকোর্টের আগের নির্দেশের ফলে কাজ থমকে রয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতির হচ্ছে না। প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা মেট্রো প্রকল্পের বিরুদ্ধে নই। মেট্রো পরিষেবা খুবই দরকার। মেট্রো বিলাসিতা নয়, এটা এখন প্রয়োজনীয়তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গঙ্গার তলা দিয়ে প্রথম মেট্রো নিয়ে আমরা গর্ব করি। এটা শুধুমাত্র অন্তর্বর্তী নির্দেশ।”
এর আগে গত ২৬ অক্টোবর হাই কোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছিল, মেট্রো রেলের কাজের জন্য ময়দানের গাছ কাটা যাবে না। ওই অংশে মেট্রোর কাজে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দে-র ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল যে, আগামী ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ময়দান এলাকায় কোনও গাছ কাটা যাবে না। শুক্রবার এই অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ বহাল রাখল আদালত।
আদালত জানিয়েছে, মেট্রো রেলের কাজ বন্ধ রাখার প্রয়োজন নেই। কাজ যেমন চলছে চলবে। কাজ করতে গিয়ে যদি নতুন করে গাছ কাটার প্রয়োজন হয় তবে বন দফতরের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিতে হবে আরভিএনএলকে। এই মামলায় বন দফতর ও রাজ্যকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এই মামলায় আরভিএনএল, সেনা বাহিনী, রাজ্যের মুখ্য সচিব, কলকাতা পুরসভা, কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রক, রাজ্যের বন দফতরকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।