বঙ্গ বিজেপি (West Bengal BJP) এই মুহূর্তে 'হট টপিক' দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ও রাহুল সিনহা (Rahul Sinha)। আদি বনাম নব্য বিজেপি-র দ্বন্দ্ব গেরুয়া শিবিরে নতুন নয়। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলের আবহে সেই দ্বন্দ্ব জোরাল ভাবে শুরু হয়েছে, যা জেলায় জেলায় এখনও চলছে। এরই মধ্যে নতুন করে বিতর্ক শুরু হল বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষ ও আরেক নেতা রাহুল সিনহাকে নিয়ে।
রাজ্য বিজেপি-তে দিলীপ ও রাহুল 'ঘরছাড়া'
বিতর্কের শুরু রাজ্য বিজেপির দফতর মুরলীধর সেন লেনের অফিস ভাঙা নিয়ে। শনিবার ভেঙে ফেলা হয়েছে প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাহল সিনহার অফিস। ভাঙা হচ্ছে দিলীপ ঘোষের ঘরটিও। এরপরই রীতিমতো অভিমান স্পষ্ট বোঝা যায় দিলীপ ঘোষের কথায়। সংবাদমাধ্যমকে দিলীপ বলেন, 'আমার সঙ্গে কোনও বিশেষ কথা বলেনি। ভাঙার সিদ্ধান্তটা আগে জানানো উচিত ছিল। আমাকে অফিস সম্পাদক বললেন এখানে কল সেন্টার হবে। কমন রুমে বসতে পারেন। আমি তো কোনও পার্টির পদাধিকারী নই। তাই আলাদা চেম্বারও থাকবে না শুনেছি। আমি মাঝে মধ্যে পার্টি অফিসে যাই পুরনো কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে। এটা যখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানানো দরকার ছিল।' অন্যদিকে রাহুল সিনহা নীরবতার মাধ্যমেই ক্ষোভ ও অভিমান প্রকাশ করছেন। তাঁর কথায়, 'আমি এখন এ নিয়ে কোনও কথা বলব না।' শুধু তাই নয়, রাহুলকে দেখা যায় দলের অফিসে মিডিয়া রুমে বসছেন।
প্রকাশ্যে বিদ্রোহ রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের
বস্তুত, ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতির পদে রাহুল সিনহাকে সরিয়ে বসানো হয় দিলীপ ঘোষকে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপি দিলীপের নেতৃত্বেই লড়াই করে। ৭০টি আসনে জিতে রাজ্য বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের ঘর ভাঙার প্রতিবাদে প্রকাশ্য মুখ খুললেন আরেক বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। দিলীপ ঘোষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমকে রাজু বলেন, 'ভোটের ফলই বলবে দল ঠিক পথে না ভুল পথে চলছে। দিলীপ ঘোষকে কেন সফল বলা হয়, তাঁর সময়ে ১৯-এর ভোটের ফল দেখুন। রেজাল্ট হাওয়ায় ভর করে হয় না, সংগঠন লাগে। আমাদের সময়ে সিপিএম-কংগ্রেস বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। তখন ইডি-সিবিআই ছিল না, আমাদের লড়াই অনেক কঠিন ছিল। বাঁকুড়া থেকে নদিয়া, বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, কোন্দল মেটাতে হবে। এখন সামনের সারিতে নতুন নেতৃত্ব, আমরা পিছনের সারিতে।'
'পার্টি তো এখনও ক্ষমতায় আসেনি'
রাজুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রবিবার দিলীপের বক্তব্য, 'এটা ঠিকই যে আমার সময় পার্টির ফল ভাল হয়েছে। তার থেকে আরও ভাল ফল হবে। পার্টি তো এখনও ক্ষমতায় আসেনি। লোকসভায় ৫০ শতাংশ আসন এখনও আমরা জিততে পারিনি। তাই করার অনেক কিছুই আছে। তখন আমাদের এত লোক ছিল না। কিন্তু সবাই মন – প্রাণ লাগিয়ে কাজ করেছে। লোকে বিশ্বাস করেছে। আমরা ফলও পেয়েছি। এখন পার্টি অনেক বড় হয়ে গেছে। তখন লোক কম ছিল একটা সমস্যা ছিল। এখন লোক বেশি হয়েছে একটা সমস্যা আছে। তাই এখন রাজ্যে যারা কাজ করছেন বা অন্য রাজ্য থেকে যে পর্যবেক্ষকরা এসেছেন সবাই মিলে বসে একএক জন কার্যকর্তা সম্পর্কে ভেবে তাদের যোগ্য কাজ দেওয়া উচিত। তাহলে পার্টি যেমন এগোচ্ছিল ঠিক এগোবে।'