লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে রাজ্যে জোটের সমীকরণ ততই বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। আর এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন আইএসএফ নেতা ও বিধায়ক নৌশদ সিদ্দিকি। তাঁর প্রশংসা শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রের শাসক ও বিরোধী, দুই দলের গলাতেই। অর্থাৎ বিজেপি ও কংগ্রেস, দুই দলই নৌশদের প্রশংসা করছেন। একদিকে রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অন্যদিকে রয়েছেন লোকসভায় কংগ্রসের নেতা ও সাংসদ অধীর চৌধুরী।
লোকসভা নির্বাচনে নৌশদ কার পক্ষে থাকবেন, তা নিয়েও জোর গুঞ্জন চলছে রাজ্য রাজনীতির অলিন্দে। এমনিতে নৌশদের আইএসএফ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধী। তাই বিরোধী রাজনীতির সূত্রে নৌশদের প্রশংসা করতে ছাড়ছেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, 'বাংলা থেকে লোকসভায় অনেক লিড পাবে মোদী। আইএসএফ আমাদের বিরোধী। আমি ওদের আদর্শের বিরোধী। নন্দীগ্রামে আইএসএফ দাঁড়িয়েছিল। আমরা হারিয়েছি। কিন্তু নৌশদ আত্মসমর্পণ করার ছেলে নয়। ওকে মিথ্যে মামলায় জেল খাটানো হয়েছে। মুকুল রায়ের মতো হলে আগেই আত্মসমর্পণ করতেন।'
এর আগে নন্দীগ্রামের বিধায়ক ভাঙড়ের বিধায়কের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, 'সিপিএম (CPM)-কংগ্রেসের (Congress) মতো সেটিংয়ের রাজনীতি নেই আইএসএফের। নৌশদ সিদ্দিকির লড়াইয়ে নিষ্ঠা আছে।' যদিও পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নৌশদ বলেন, 'বিজেপির প্রত্য়ক্ষ বা পরোক্ষ কোনওরকম সহযোগিতা তাঁদের প্রয়োজন নেই।' সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবার (Diamond Harbar) থেকে লোকসভা ভোটে লড়াই করার ইঙ্গিত দিয়েছেন নৌশদ। তারপরেই তিনি শিরোনামে চলে এসেছেন। ডায়মন্ডহারবারে সংখ্য়ালঘু ভোট প্রায় ৫৩ শতাংশ। ২০১৪ সাল থেকে এই আসনে সাংসদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর তাই অভিষককে টক্কর দেওয়ার ইঙ্গিত দিতেই রাজনীতিতে নৌশদকে নিয়ে নতুন চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে, ডায়মন্ড হারবারে আইএসএফ প্রার্থী দিলে অভিষেকের জয়ের পথে অন্তরায় তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন অধীর চৌধুরী। কয়েকদিন আগেই তিনি বলেন,'আমার কাছে যা খবর, আইএসএফ ডায়মন্ডহারবারে যদি দাঁড়ায় তাহলে খোকাবাবুর বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এটা আমার কাছে খবর আছে, ওখানে আইএসএফের প্রার্থী থাকলে খোকাবাবুর জয়ের পথে অন্তরায় তৈরি হবে।' ডায়মন্ড হারবার কি আইএসএফ-কে ছেড়ে দিতে পারে কংগ্রেস ও সিপিএম? এই প্রশ্নে অধীর বলেন,'কোথায় আইএসএফ, কোথায় সিপিএম, জানি না! আমাদের কোনও কথা হয়নি। তবে আমার সঙ্গে সিপিএম পার্টির ভাল সম্পর্ক আছে। আগেও আমরা একসঙ্গে লড়েছি। আগামী দিনেও প্রয়োজন হলে একসঙ্গে লড়ব। তৃণমূল অত্যাচারীদের দল। তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করতে পারব না।'