scorecardresearch
 

Nabanna-West Bengal : 'টিফিন টাইমে ওয়াশরুমও যেতে পারবেন না রাজ্যের সরকারি কর্মীরা?' নবান্নের নির্দেশিকায় শোরগোল

নবান্নের নির্দেশিকা ঘিরে শোরগোল রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মধ্যে। ২০ মে রাজ্যের অর্থদফতরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই নির্দেশিকায় উল্লেখ, টিফিন টাইম অর্থাৎ দুপুর দেড়টা থেকে দুটোর মধ্যে সরকারি কর্মীরা টিফিন খাওয়া সংক্রান্ত ছাড়া অন্য কোনও কাজ করতে পারবেন না। আর সেই নির্দেশিকা নিয়েই প্রশ্ন সরকারি কর্মীদের। তাঁদের জিজ্ঞাসা, 'তাহলে কি সরকার এটা বলতে চাইছে যে, ওই সময় কোনও কর্মী ওয়াশরুমেও যেতে পারবেন না?'

Advertisement
ফাইল ছবি ফাইল ছবি
হাইলাইটস
  • নবান্নের নির্দেশিকা ঘিরে শোরগোল রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মধ্যে
  • টিফিন ব্রেকে যাওয়া যাবে না ওয়াশরুম ?

নবান্নের নির্দেশিকা ঘিরে শোরগোল রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মধ্যে। ২০ মে রাজ্যের অর্থদফতরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই নির্দেশিকায় উল্লেখ, টিফিন টাইম অর্থাৎ দুপুর দেড়টা থেকে দুটোর মধ্যে সরকারি কর্মীরা টিফিন খাওয়া সংক্রান্ত ছাড়া অন্য কোনও কাজ করতে পারবেন না। আর সেই নির্দেশিকা নিয়েই প্রশ্ন সরকারি কর্মীদের। তাঁদের জিজ্ঞাসা, 'তাহলে কি সরকার এটা বলতে চাইছে যে, ওই সময় কোনও কর্মী ওয়াশরুমেও যেতে পারবেন না?'

এই নিয়ে রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ তথা রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের এক সদস্য বলেন, 'রাজ্য সরকার যে নির্দেশিকা জারি করেছে সেই অনুযায়ী ওই দেড়টা থেকে দুটো পর্যন্ত কোনও সরকারি কর্মী টিফির ব্যতীত অন্য কাজ করতে পারবেন না। তাহলে কি সরকার এটা বলতে চাইছে যে, সরকারি কর্মীরা সেই সময় ওয়াশরুমও যেতে পারবেন না ? এমন অনেকেই রয়েছেন যে, তাঁরা টিফিন টাইমে পরিবারের সদস্যদের ওষুধ কিনতে যান। সেটাও কি আর গ্রাহ্য হবে না ? সরকারকে এর সদুত্তর দিতে হবে।'

আরও পড়ুন : অফিস আসলেও এই কারণে 'অনুপস্থিত' করা হবে সরকারি কর্মীদের, নির্দেশিকা রাজ্যের

প্রসঙ্গত, ডিএ আন্দোলন নিয়ে এমনিতেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। রাজ্য সরকার বকেয়া ডিএ মেটায়নি এই অভিযোগ এনে মিছিল, মিটিং করেছে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো। শহিদ মিনারে অবস্থানজ-অনশনও হয়েছে। তারপরও রাজ্য সরকার কর্মীদের কথায় কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে সরকারের এই নির্দেশিকায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মীদের একাংশ। 

সরকারের এই নির্দেশিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কো-অর্ডিনেশন কমিটি, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, সরকারি কর্মচারী পরিষদ, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-সহ একাধিক সংগঠন। রাজ্যের অন্যতম বড় সরকারি কর্মীদের সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী এই নির্দেশিকা নিয়ে বলেন, 'ডিএ-সহ একাধিক দাবিতে সরকারি কর্মীরা আন্দোলন করছে। আর তাতেই সরকার ভীত। সরকারি কর্মীদের ভয় দেখাতে এমন নির্দেশিকা বানানো হয়েছে। সেখানে উল্লেখ, টিফিন ছাড়া অন্য কোনও কাজ করা যাবে না ? কেন ? এমনটা হতে পারে ? অফিসের বিরতিতে সরকারি কর্মীরা কী করবেন সেটা তাঁদের ব্যাপার। এটা তাঁদের অধিকার। এটা সরকার ঠিক করে দিতে পারে না। ওয়াশরুমেও কি যেতে পারবেন না সরকারি কর্মীরা ? যিনি এই নির্দেশিকা বানিয়েছেন তিনি কি ভেবেচিন্তে বানিয়েছেন ? তবে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আমরা এই নির্দেশিকা মানছি না। বরং ওই টিফিন টাইমে রাজ্যজুড়ে সরকারি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাবেন।' 

Advertisement
এই সেই নির্দেশিকা
এই সেই নির্দেশিকা

এই বিষয়ে সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, 'সরকারের দাবি, কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে এই নির্দেশিকা। কিন্তু সেটা ফিরিয়ে আনতে গেলে তো আগে ডিএ মিটিয়ে দেওয়া দরকার। সরকার অর্থনৈতিকভাবে কর্মীদের বঞ্চিত করবেন আর কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার দাবি করবে, এটা প্রলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। সরকার এই রকম নির্দেশিকা দেবে, এটা আন্দাজ করেছিলাম। সরকারি কর্মীদের বনধ সর্বাত্মক সফল হওয়ার পরই সরকার ভয় পেয়েছে। খাদ্য ভবনের কর্মীদের অন্যায়ভাবে বদলি করা হয়েছে। আমাদের মনে হচ্ছে, এই সরকারের যাওয়ার সময় চলে এসেছে। অতীতে লালুপ্রসাদ যাদব, জয়ললিতা এই সব সরকারের ক্ষেত্রে এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাঁরাও সরকারি কর্মীদের উপর অত্যাচার নামিয়ে এনেছিলেন। তার ফল পেয়েছিলেন। এই সরকারও বুঝবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যদি মনে করে এসব করে সরকারি কর্মীদের দমানো যাবে, তাহলে ভুব ভাবছে। এতে আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে।' 

আরও পড়ুন : শিক্ষিকারা পরতে পারবেন না জিনস, লেগিংস; পরলেই শাস্তির নিদান

কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের তরফে মলয় মুখোপাধ্য়ায় বলেন, 'আন্দোলন বন্ধ করতে সরকারের এমন প্রতিহিংসামূলক আচরণ কাম্য নয়। এই সরকার স্বৈরাচারী তা ফের একবার প্রমাণ হয়ে গেল। আমাদের যখন ইচ্ছে হবে, তখনই আন্দোলন করব। সরকার যদি ডিএ মিটিয়ে দিত, যদি অন্যায়ভাবে বদলি না করত তাহলে এই আন্দোলনের প্রয়োজন পড়ত না। সরকার আগে কর্মীদের স্বার্থে নজর দিক।' 

সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'সরকারের যে নির্দেশিকা তা আমরা মেনে নেব না। এই সরকারকে যোগ্য ভাষায় জবাব দেব। যে টিফিন টাইমে কর্মীদের বেঁধে রাখার চেষ্টা হচ্ছে, সেই সময়ই সরকারি অফিসগুলিতে বিক্ষোভ হবে।' 

আরও পড়ুন : ভিক্ষে করতে নারাজ, নাকে অক্সিজেনের নল নিয়েই রিক্সা চালান এই বাঙালি; VIRAL

কী রয়েছে নির্দেশিকায় ? শনিবার রাজ্যের অর্থ দফতরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, আরও বেশি করে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কাজ চলাকালীন ঝামেলা এড়াতে কাজের সময় এবং টিফিন ব্রেকের সময় বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে সরকারি কর্মীদের। এই নিয়মগুলির মধ্যে রয়েছে যথাসময় হাজিরা দেওয়া, কাজের সময় অতিরিক্ত ঝামেলায় না জড়ানো, অফিস প্রধানের অনুমতি ছাড়া অফিসের বাইরে না যাওয়া।  সরকারি অফিসে দুপুর দেড়টা থেকে ২টো পর্যন্ত টিফিন ব্রেকের সময় কেউ দফতরের বাইরে যেতে পারবেন না। এই নিয়ম পালিত না হলে নিয়মলঙ্ঘনকারী ব্যক্তিকে অনুপস্থিত হিসেবে ধরা হবে।

 

Advertisement