তীব্র গরমে নাভিশ্বাস প্রাণীকুল। দাবদাহে মানুষের সঙ্গে সঙ্গে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছপালাও। ফসলেও তার প্রভাব পড়ছে। এর মধ্যে মাথায় হাত মালদার আমচাষিদেরও। এই সময় আম পাকার। কিন্তু মরশুমের শুরুতেই আম পাকার সময় এত গরম দিয়েছে আধকাঁচা অবস্থাতেই আম গাছেই পচছে। কোথাও বোঁটা শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রত্যাশামতো ফলন হচ্ছে না। ফলে ফলন কম হবে বলেই ধরে নিচ্ছেন আম চাষিরা। এই বছর আম মহার্ঘ্য হতে চলেছে তা এখন থেকেই আগাম বলে দিচ্ছেন আমচাষিরা। কৃষকেরা চেষ্টা করছেন বাগানে জল স্প্রে করে আমকে টিকিয়ে রাখার। কিন্তু প্রচন্ড রোদের তাপে তা কাজে দিচ্ছে না। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে অন্ত এক দফার বৃষ্টি না হলে যেটুকু গাছে আছে, সেটুকুও বাঁচানো যাবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে আমচাষিদের।
লক্ষ্যমাত্রার বহু পিছনে উৎপাদন
চলতি মরশুমে জেলায় তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা আমের উৎপাদনে ব্যাপক ঘাটতি হতে পারে। কারণ বৃষ্টির জলের অভাবে অধিকাংশ আম ঝরে পড়ছে। সম্ভাব্য ফলনের চেয়ে অনেক কম ফলন হওয়ার সম্ভাবনা। তাই এবার আমের দামও ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেতে পারে। যদিও আমচাষীরা চেষ্টা করছেন নিজেদের লোকসান ঠেকাতে নিয়মিত বাগানে স্প্রে করে আম টিকিয়ে রাখার।
অনাবৃষ্টিতে মাথায় হাত
বৃষ্টি না হওয়ায় সঠিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে না আম। এই বছর এমনিতেই মালদায় এবার দেরিতে আমের মুকুল এসেছে। তার ওপর গত কিছুদিন ধরে তীব্র গরমের জন্য আমের সঠিক বৃদ্ধি হচ্ছে না। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমে কীট পতঙ্গের উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতেও অনেক আম নষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মাথায় হাত পড়েছে জেলার আম চাষিদের। মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আম শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছে আম সাইজে বড় হবে না। অনেকের আম বাগান লিজ নেওয়া রয়েছে। তাঁরা এখন ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে পারেন। এই মুহূর্তে বৃষ্টি ছাড়া আম বাঁচানো প্রায় অসম্ভব।
এক সময় মালদার আমের খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও এই জেলার আম পাড়ি দিত বিদেশের বহু জায়গায়। কিন্তু দিনের পর দিন বাগানের যত্ন না নেওয়ায়, অনিয়ন্ত্রিতভাবে কীটনাশক এবং রাসায়নিক এর ব্যবহারে কমছে, এই জেলার আমের কদর। করোনাকালে পরপর কয়েক বছর ফলন হওয়া সত্বেও পরিবহণ সহ নানা কারণে আমচাষে ক্ষতি হয়েছিল। প্রচুর টাকা রাজস্ব নষ্ট হয়েছে। গত ২ বছর ধরে আমচাষিরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল। তার মধ্যে আবহাওয়া বাদ সাধায় মাথায় হাত চাষিদের।