আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, আগের থেকে এখন অনেক বেশি সংখ্যক রোগী আয়ুর্বেদ চিকিৎসার আশ্রয় নেন। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, শরীর ঠিক রাখতে সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া প্রয়োজন। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবারের উপর নির্ভর করে আপনার শরীর কেমন থাকবে। সঠিক খাবার হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। কিন্তু ভুল সময়ে ,ভুল খাবার খেলে অনেক সমস্যা হতে পারে। তাতে ওজন বাড়ে, আলস্য আসে, কাজের প্রতি আগ্রহ কমে যায়।
সকাল ৬ টা থেকে ১০ টা কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত?
সকালে শরীর স্বাভাবিকভাবেই ভারী এবং ঠান্ডা থাকে। এই সময়ে, হালকা গরম জল, ত্রিফলা জল বা সাধারণ জল খাওয়া উচিত। সকালের সব থেকে উপযুক্ত খাবার হল পেঁপে, আপেল, ডুমুর। কারণ এগুলো সহজে হজম হয়। গরম জলের সঙ্গে হালকা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। ঘুম থেকে উঠে দুধ, ভাজা খাবার এবং ভারী খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে হজম ক্ষমতা প্রভাবিত হয়। আলস্য বাড়তে পারে।
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো
সমৃদ্ধ এবং সুষম খাবারের জন্য এই সময়কে বিবেচনা করা হয়। এই সময়ে পাচক অগ্নি সবচেয়ে শক্তিশালী থাকে, যার অর্থ আপনার শরীরের খাবার হজম করার এবং পুষ্টি সহজে শোষণ করার ক্ষমতা থাকে। রুটি, ডাল, মৌসুমি সবজি, ভাত এবং ঘি এই সময় খাওয়া যেতে পারে। হালকা গরম জল খাওয়া খুব উপকারী। তবে দই, টক ফল এবং মিষ্টি পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত। এই সময় দিনের প্রধান খাবার খাওয়া উচিত, তাহলে হজম ক্ষমতা বাড়বে। সন্ধে পর্যন্ত পেটে থাকবে।
দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৫টা
দুপুরের পর থেকে শরীরের শক্তির মাত্রা কমতে শুরু করে। তাই এই সময়ে হালকা এবং সহজে হজমযোগ্য খাবার গ্রহণ করা উচিত। মৌরি, ধনেপাতা বা জিরে চা এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। এই সময়ের উল্লেখযোগ্য খাবার হল অল্প পরিমাণে ভেজানো বাদাম, আখরোট বা অন্য শুকনো ফল। এগুলো শরীরকে ভালো চর্বি এবং প্রোটিন সরবরাহ করে। তবে এই সময়ে ফল খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
বিকেল ৫ টা থেকে ৭ টা
সন্ধেবেলা ভারী খাবারের পরিবর্তে, শুকনো ভাজা ছোলা বা স্প্রাউট ভালো বিকল্প। এগুলো প্রোটিন, ফাইবার এবং খনিজ পদার্থের ভালো উৎস। এই সময় ভাজা বা মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ এতে হজম প্রক্রিয়া প্রভাবিত হতে পারে।
রাত ৮ টা থেকে ১০ টা
আয়ুর্বেদে সব সময় রাতের বেলা হালকা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। খিচুড়ি, মুগ ডালের স্যুপ, ভাপানো শাকসবজি এই সময় খাওয়া যেতে পারে। কারণ এগুলো হজম ক্ষমতা বাড়ায়। রাতে ভারী, মশলাদার বা তৈলাক্ত খাবার হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয় এবং ঘুমের মানকেও প্রভাবিত করতে পারে।