Baldness: টাকের দুশ্চিন্তা থেকে হতে পারে এই গুরুতর অসুখ, হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট ছাড়াই সমাধান দিলেন ডাক্তাররা

চেহারার সৌন্দর্য আজকের সমাজে যত গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে আত্মসম্মান এবং মানসিক স্থিতি। চুল পড়া—অনেকের কাছে হয়তো নিছকই একটি সাধারণ শারীরিক সমস্যা, কিন্তু বাস্তবে তা একজন মানুষের আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে চূড়ান্তভাবে নাড়িয়ে দিতে পারে।

Advertisement
টাকের দুশ্চিন্তা থেকে হতে পারে এই গুরুতর অসুখ, হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট ছাড়াই সমাধান দিলেন ডাক্তাররা
হাইলাইটস
  • চেহারার সৌন্দর্য আজকের সমাজে যত গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে আত্মসম্মান এবং মানসিক স্থিতি।
  • সম্প্রতি কানপুরে এক ইঞ্জিনিয়ারের চুল প্রতিস্থাপনের সময় মৃত্যুর ঘটনা ফের এই বিতর্কের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে টাক পড়া ও তার সামাজিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনাকে।

চেহারার সৌন্দর্য আজকের সমাজে যত গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে আত্মসম্মান এবং মানসিক স্থিতি। চুল পড়া—অনেকের কাছে হয়তো নিছকই একটি সাধারণ শারীরিক সমস্যা, কিন্তু বাস্তবে তা একজন মানুষের আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে চূড়ান্তভাবে নাড়িয়ে দিতে পারে। সম্প্রতি কানপুরে এক ইঞ্জিনিয়ারের চুল প্রতিস্থাপনের সময় মৃত্যুর ঘটনা ফের এই বিতর্কের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে টাক পড়া ও তার সামাজিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনাকে।

চুল পড়া মানে কেবল সৌন্দর্যের ক্ষতি নয়
চিকিৎসক এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুল পড়া এখন আর শুধুমাত্র প্রসাধনী সমস্যা নয়। এটি এক ধরণের মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং ডিপ্রেশনের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অনেকেই আয়নার সামনে দাঁড়াতে ভয় পান, মিটিং বা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সংকোচ বোধ করেন। "আমি আগে ভালো দেখতে ছিলাম, এখন আয়নায় নিজেকে দেখেও ভালো লাগছে না"—এমন কথাই শুনছেন চিকিৎসকরা।

‘চেহারার কর’ দিতে বাধ্য হচ্ছে পুরুষরাও
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিধি এম পিলানিয়া জানিয়েছেন, সৌন্দর্য নিয়ে সমাজে চাপ কেবল নারীদের উপরই নয়, পুরুষরাও তীব্রভাবে এই চাপ অনুভব করেন। বিশেষ করে ভারতীয় সমাজে যেখানে বিয়েতে পাত্রের চেহারা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়, সেখানে টাককে এক ধরনের ত্রুটি হিসেবে দেখা হয়। ফলে বহু পুরুষ মনে করেন তারা আর ‘আকর্ষণীয়’ নন, যা তাদের আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা দেয় এবং ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলে।

সামাজিক রীতিনীতির চাপে চিকিৎসার বদলে আত্মগোপন
টাক পড়ার সমস্যা নিয়ে অনেকে চিকিৎসকের কাছে যেতে দ্বিধা বোধ করেন। তারা মনে করেন এটা ‘স্বাভাবিক বার্ধক্য’, অথবা চিকিৎসা করলে সমাজে ছোট হতে হবে। কিন্তু চাপ ভেতরে ভেতরে বেড়েই চলে। কিছু ক্ষেত্রে তা Body Dysmorphic Disorder (BDD)-এ রূপ নেয়, যেখানে ব্যক্তি নিজের শরীরের একটি দিক নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তিত হয়ে পড়েন।

টাক পড়ার বৈজ্ঞানিক কারণ এবং চিকিৎসা
চিকিৎসকদের মতে, হরমোন DHT (ডাইহাইড্রোটেস্টোস্টেরন) চুলের ফলিকল সঙ্কুচিত করে, যার ফলে চুল পড়ে। জেনেটিক কারণও ভূমিকা রাখে। মিনোক্সিডিল এবং ফিনাস্টেরাইডের মতো ওষুধে কিছুটা উপকার মিললেও, অনেকেই চুল প্রতিস্থাপন বা ট্রান্সপ্ল্যান্টের পথ বেছে নেন। কিন্তু সেটাও ঝুঁকিপূর্ণ—যদি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে না হয়, তাহলে প্রাণনাশের আশঙ্কাও থেকে যায়।

Advertisement

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াও জরুরি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ওষুধ নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া উচিত।

প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ

নিয়মিত যোগব্যায়াম ও ধ্যান

প্রয়োজন হলে কাউন্সেলিং

এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: আত্মপ্রেম

আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার মূল মন্ত্র: মেনে নেওয়া
বিশেষজ্ঞদের মতে, টাক পড়া মেনে নেওয়াই সবচেয়ে ভালো উপায়। শুধু চুল হারানো মানেই জীবন থেমে যায় না। ইতিহাসে জুলিয়াস সিজার থেকে গান্ধী—অনেক কিংবদন্তির মাথায় চুল ছিল না, কিন্তু তাঁদের প্রভাব ছিল বিশ্বজোড়া। সৌন্দর্য মানে কেবল চুল বা বাহ্যিক চেহারা নয়—ব্যক্তিত্ব, আচরণ, আত্মবিশ্বাসই আসল।

সেই কারণে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন—চুল না থাকলেও জীবন আছে, সম্মান আছে, সম্ভাবনা আছে। নিজের চেহারা নিয়ে মজা করা বা অন্যকে ছোট করা বন্ধ করুন। কারণ, কারো টাক আপনার হাসির বিষয় হতে পারে, কিন্তু তার জন্য সেটা হতে পারে গভীর যন্ত্রণার কারণ।

 

POST A COMMENT
Advertisement