বর্তমান সময়ে হৃদরোগের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। একসময় শুধুমাত্র বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা গেলেও, এখন তরুণরাও হৃদরোগের শিকার হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এর মধ্যে একটি কার্যকরী উপাদান হলো অর্জুন গাছের ছাল, যা আয়ুর্বেদে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
অর্জুন ছালের উপকারিতা
সাওল হার্ট কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিমল ছাজেদ জানিয়েছেন, আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদরোগের সমস্যায় সবচেয়ে কার্যকরী প্রতিকার অর্জুন ছাল। এটি কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদপিণ্ডের পাম্পিং ক্ষমতা বাড়ায়।
হৃদরোগে অর্জুন ছালের ভূমিকা:
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: অর্জুন ছাল শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: এটি রক্তনালীগুলিকে প্রসারিত করে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা উন্নত করা: এটি হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে।
কাশি ও কফ উপশমে সহায়ক: ঠান্ডা-কাশির সমস্যা দূর করতে এটি কার্যকরী।
ত্বকের যত্নে উপকারী: অর্জুন ছালের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়।
কীভাবে গ্রহণ করবেন?
অর্জুন ছাল খুবই সহজলভ্য এবং এটি সহজেই বিভিন্নভাবে গ্রহণ করা যায়।
অর্জুন ছালের জল:
ছোট ছোট টুকরো করে অর্জুন ছাল কেটে নিন।
১০০ গ্রাম জলে এটি সারারাত ভিজিয়ে রাখুন।
সকালে সেই জল পান করুন এবং ছাল ফেলে দিন।
অর্জুন চা:
জলে অর্জুন ছালের গুঁড়ো, আদা ও তুলসীপাতা ফুটিয়ে নিন।
এই পানীয়টি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।
মধুর সাথে অর্জুন গুঁড়ো: অর্জুন গুঁড়ো মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে এটি আরও কার্যকরী হয়।
অর্জুন ট্যাবলেট:
বর্তমানে বাজারে অর্জুন ছালের নির্যাস থেকে তৈরি ট্যাবলেট পাওয়া যায়, যা গ্রহণ করা যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
হৃদরোগ প্রতিরোধে জীবনধারায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা জরুরি। নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং প্রাকৃতিক উপাদান যেমন অর্জুন ছালের ব্যবহার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে এটি গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।