হিন্দু ধর্মে শঙ্খকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিশ্বাস করা হয়, পুজোর সময় শঙ্খ বাজালে দেবতা সন্তুষ্ট হন। আবার আয়ুর্বেদে শঙ্খ বাজানোকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যদিও কমেছে শঙ্খর ব্যবহার। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণায় শঙ্খ সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে।
রাজস্থানের জয়পুরের এক চিকিৎসক এই গবেষণা করেছেন। তা নিয়ে প্রতিবেদন লিখেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। সেখানে প্রকাশ, শঙ্খ বাজালে ঘুমের সময় নাক ডাকা বন্ধ হয়ে যায়। আবার শ্বাসকষ্টের সমস্য়াও মেটে। রোজ শঙ্খ বাজালে গলার পেশী শক্তিশালী হয়। ঘুমের মানও উন্নত হয়।
স্লিপ অ্যাপনিয়ার কথা আমরা কমবেশি সবাই শুনেছি। এই রোগের কারণে কোনও কোনও ব্যক্তির ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। এর জেরে শরীরে অস্তস্তি হয়, অক্সিজেন সরবরাহ কমে। জয়পুরের এক চিকিৎসক স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত একজন রোগীকে দিনে দুবার শঙ্খ বাজানোর পরামর্শ দেন। তাতে ভালো ফল পান সেই ব্যক্তি। এক বছরের মধ্যে তাঁর শ্বাসকষ্ট কমে যায়, ঘুমের মধ্যে ডাকাও। এরপরই সেই চিকিৎসক শঙ্খ বাজানো নিয়ে গবেষণা করবেন বলে মনস্থির করেন।
আবার অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, স্যাক্সোফোনের মতো বাদ্যযন্ত্র বাজালে ঘুমের মান উন্নত হয়। তা দেখে অনুমান করা হয়েছিল, শঙ্খ বাজানো স্লিপ অ্যাপনিয়ার ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে। এই গবেষণাটি ইউরোপীয় রেসপিরেটরি জার্নাল ওপেন রিসার্চে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণার জন্য ওই চিকিৎসক তাঁর ৩০ জনের রোগীর দলকে দুইভাগে ভাগ করেন। প্রথম দলের ১৪ জনকে দিনে দুবার শঙ্খ বাজাতে বলা হয়েছিল। দ্বিতীয় দলের ১৬ জনকে শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। ৬ মাস পর দেখা যায়, যাঁরা শঙ্খ বাজিয়েছেন তাঁদের ঘুমের মান আগের থেকে ৩৪ শতাংশ উন্নত হয়েছে। তাদের শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতিও কমেছে।
গবেষকদের দাবি, শঙ্খ বাজানোর সময় যখন আমরা গভীরভাবে শ্বাস নিই এবং শঙ্খের মধ্যে ফুঁ দেই, তখন তা গলা এবং জিভের পেশীর উপর চাপ সৃষ্টি করে। এই প্রক্রিয়াটি গলার পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে এবং স্লিপ অ্যাপনিয়ায় গলার সংকোচন রোধ করে।