Covid Again: বাড়ছে সংক্রমণ, এই চার রাজ্যে বিশেষ নজর রাখছে কেন্দ্র

ভারতে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কোভিড-১৯। নতুন জেএন.১ (JN.1) ভ্যারিয়েন্টের কারণে কেরল, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাট, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে করোনা সংক্রমণ।

Advertisement
বাড়ছে Covid-19 সংক্রমণ, এই চার রাজ্যে বিশেষ নজর রাখছে কেন্দ্র

ভারতে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কোভিড-১৯। নতুন জেএন.১ (JN.1) ভ্যারিয়েন্টের কারণে কেরল, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাট, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। কেরল ও তামিলনাড়ুতে সর্বাধিক সংখ্যক নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

কেরল সরকার ইতিমধ্যেই সব জেলায় কড়া নজরদারি এবং র‍্যান্ডম করোনা টেস্টিং চালু করেছে। তামিলনাড়ু সরকার জানিয়েছে, এখন থেকে সব পাবলিক প্লেসে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।

সারা দেশে করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব একটি বৈঠক করেছেন। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এখন থেকেই সতর্কতার পথ অবলম্বন করেছে। একাধিক এজেন্সির মাধ্যমে গোটা পরিস্থিতিতে কড়া নজর রাখছে।

কর্নাটকে বাড়ছে সংক্রমণ, মৃত ১
শনিবার কর্নাটকে ৫টি নতুন করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে। বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৮৪ বছরের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ১৭ মে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং পরে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। কর্নাটকে বর্তমানে ৩৮টি অ্যাক্টিভ কেস রয়েছে, যার মধ্যে ৩২টি বেঙ্গালুরুতেই।

দিল্লিতে নতুন গাইডলাইন, প্রস্তুত সরকারি হাসপাতাল
দিল্লির সরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য করোনা সংক্রান্ত গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। হাসপাতালগুলিকে অক্সিজেন, বেড, ওষুধ ও টিকার পর্যাপ্ত মজুত রাখতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রী পঙ্কজ সিং জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৩টি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

মহারাষ্ট্রে বাড়ছে সংক্রমণ, মৃত্যু তরুণের
মহারাষ্ট্রে বর্তমানে ১৬৬টি অ্যাক্টিভ কেস রয়েছে। জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৭,১৪৪টি কেস রিপোর্ট হয়েছে। শুধু শনিবারই ৪৭টি নতুন সংক্রমণের খবর মিলেছে— যার মধ্যে ৩০টি মুম্বই, ৭টি পুনে, ৩টি নবি মুম্বই এবং ৬টি থানে জেলার। শনিবার থানে জেলার একটি হাসপাতালে ২১ বছরের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ডায়াবেটিস কিটোঅ্যাসিডোসিসে আক্রান্ত ছিলেন।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
আহমেদাবাদের স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ড. উজ্জ্বল পারেখ জানিয়েছেন, জেএন.১ হল ওমিক্রনেরই একটি ভ্যারিয়েন্ট। এটি হালকা সংক্রমণ সৃষ্টি করে। লক্ষণ হিসেবে সাধারণত জ্বর, গলা খুসখুস, সর্দি, মাথাব্যথা, গা-হাত-পায়ে যন্ত্রণা, পেট ব্যথা বা ডায়রিয়া হচ্ছে। অধিকাংশ রোগীই ৪-৫ দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠছেন।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ভবিষ্যতে কী পরিস্থিতি হতে পারে, তা সময় বলবে। তবে এখনও পর্যন্ত যে মিউটেশনগুলো দেখা যাচ্ছে, তা ২০২০-২১ সালের তুলনায় অনেকটাই কম বিপজ্জনক। আমাদের শরীরে ইতিমধ্যেই আংশিক প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে উঠেছে।’

ড. প্রভীন গর্গের পরামর্শ
করোনা থেকে বাঁচতে এখনই সবার মাস্ক পরাটা বাধ্যতামূলক নয় বলেই মনে করছেন ড. প্রভীন গর্গ। তবে যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা রয়েছে, কিংবা যাঁরা গর্ভবতী বা ছোট শিশু, তাঁদের ভিড়ের জায়গায় গেলে মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।

হাসপাতালে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরা উচিত বলেও জানিয়েছেন তিনি। যাঁদের ভাইরাল ইনফেকশন রয়েছে, তাঁদেরও অফিসে গেলে মাস্ক পরা উচিত যাতে অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ না ছড়ায়।

বুস্টার ডোজ দরকার?
ড. গর্গ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জেএন.১ প্রতিরোধে বুস্টার ডোজের বিষয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপর পুরনো টিকা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে গবেষণা চলছে। তাই এখনই বুস্টার নেওয়ার দরকার নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।

সতর্কতা জরুরি?
ড. গর্গ বলেছেন, করোনা ভাইরাস এখন আমাদের পরিবেশের অংশ হয়ে গেছে। ভবিষ্যতেও এটি থাকবে এবং তার মিউটেশন ঘটতেই থাকবে। কাজেই ঘাবড়ানোর কিছু নেই, তবে যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

জ্বর হলে নিজে থেকে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল রাখতে হবে। সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব।

ফের স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে?
ড. গর্গ জানিয়েছেন—হাত পরিষ্কার রাখা এমনিতেই খুব ভালো অভ্যাস। তার উপর করোনা এক ধরনের ড্রপলেট ইনফেকশন। তাই হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

জেএন.১ কি শিশু ও গর্ভবতীদের জন্য বেশি বিপজ্জনক?
তিনি জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের রিপোর্ট বলছে, জেএন.১ তুলনামূলকভাবে দ্রুত ছড়াচ্ছে। তবে এর কোনও মারাত্মক প্রভাব এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। তাই অযথা আতঙ্কের কিছু নেই। তবে গর্ভবতী মহিলা, শিশু ও রোগপ্রবণ মানুষদের বিশেষ সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।

POST A COMMENT
Advertisement