কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়েড যা কোষের ঝিল্লি বা (সেল মেমব্রেনে)-এ পাওয়া যায় এবং যা সব প্রাণীর রক্তে পরিবাহিত হয়। একটি সুস্থ শরীরের জন্য প্রচুর কোলেস্টেরল প্রয়োজন। কোলেস্টেরল কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি স্নায়ু কোষকে রক্ষা করতে, ভিটামিন ও হরমোন তৈরি করতে কাজ করে।
মানব শরীরে প্রধানত দুই ধরনের কোলেস্টেরল পাওয়া যায় - উচ্চ ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (High Density Lipoprotein/ HDL) এবং নিম্ন ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (Low Density Lipoprotein Cholesterol/ LDL) কোলেস্টেরল। এলডিএল কোলেস্টেরলকে খারাপ কোলেস্টেরলও বলা হয়।
উচ্চ মাত্রায় এলডিএল কোলেস্টেরল থাকলে হৃদরোগের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। এইচডিএল কোলেস্টেরল ভাল কোলেস্টেরল নামে পরিচিত। এটি আপনার রক্ত থেকে লিভারে খারাপ কোলেস্টেরল বহন করে এবং এটি থেকে মুক্তি পায়। এছাড়াও এইচডিএল কোলেস্টেরল আপনার শরীরকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে। ৪০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিরা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খাদ্যাভ্যাসে কিছু প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে পারেন। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও বাজারে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর জন্য অনেক ধরণের ওষুধ পাওয়া যায়। তবে আপনি প্রাকৃতিক পদ্ধতির মাধ্যমেও এটি কমাতে পারেন। জানুন কী কী খেলে প্রাকৃতিকভাবে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো সম্ভব।
পালং শাক
পালং শাক লুটিন, ফোলেট এবং ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস- যা সবই হৃদরোগের জন্য উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন পালং শাক খেলে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করতে পারে, যা ধমনীতে প্লাক তৈরির একটি প্রধান কারণ।
ওটস
কোলেস্টেরল কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল এক বাটি ওটস খাওয়া। এটি আপনাকে ১ থেকে ২ গ্রাম দ্রবণীয় ফাইবার দেয়।
বেগুন
বেগুনে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে। ১ কাপ বেগুনে ২.৪ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার থাকে। ফাইবার রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক, স্থূলতা এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে।
আপেল
প্রতিদিন দুটি আপেল খেলে মোট এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা উভয়ই হ্রাস পায়। এটি ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা হ্রাস করতে পারে। একটি আপেলে ৩-৭ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার থাকে। এছাড়াও, আপেলে পলিফেনল নামক যৌগ থাকে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রার উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।