Increase Testosterone Naturally: পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হরমোন। এটি শরীরের শক্তি, মাংসপেশি, যৌন ক্ষমতা থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যেতে পারে। তবে কিছু বিজ্ঞানসম্মত অভ্যাস মেনে চললে সহজেই এই হরমোনের মাত্রা বাড়ানো সম্ভব। দেখে নিন সেরা কিছু উপায়।
১. হাই ইনটেনসিটি ব্যায়াম করুন
টেস্টোস্টেরন বাড়াতে ব্যায়ামের কোনও বিকল্প নেই। বিশেষ করে হাই ইনটেনসিটি ট্রেনিং (HIIT) এবং ওজন তোলা বা স্ট্রেংথ ট্রেনিং সবচেয়ে কার্যকরী। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট জোরে দৌড়ানো, সাইক্লিং করা, কিংবা ভারোত্তোলন মাংসপেশির বৃদ্ধি ঘটায় এবং টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ বাড়ায়। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে শরীর ফিট থাকে এবং দীর্ঘমেয়াদে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে।
২. পর্যাপ্ত ঘুম অত্যাবশ্যক
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরে হরমোনের স্বাভাবিক ক্ষরণে সমস্যা দেখা দেয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ঘুম কম হলে শুধু হরমোন নয়, শরীরের এনার্জি লেভেলও দ্রুত কমে যায়। তাই রাতে ঘুমোনোর আগে মোবাইল বা টিভির ব্যবহার কমিয়ে রিল্যাক্স করুন এবং নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৩. পুষ্টিকর খাবার খান
টেস্টোস্টেরন বাড়াতে ডায়েটের ভূমিকা অপরিসীম। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং শাকসবজি, ফল রাখুন। ডিম, মুরগির মাংস, মাছ, বাদাম, কাজু, আমন্ড, অলিভ অয়েল শরীরে টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে সহায়তা করে। একইসঙ্গে চিনি, অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত খাবার, ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন। সুষম খাবার শরীরে শক্তি যোগায় এবং হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখে।
৪. ধ্যান ও প্রাণায়মে মনোযোগ দিন
স্ট্রেস বা মানসিক চাপ টেস্টোস্টেরনের মাত্রা দ্রুত কমিয়ে দেয়। প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট ধ্যান বা প্রাণায়াম করলে মস্তিষ্ক শান্ত হয়, কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন কমে, আর টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ বাড়ে। অফিসের ব্যস্ততা বা ব্যক্তিগত চাপ সামলাতে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে।
৫. রোদ লাগান প্রতিদিন
ভিটামিন ডি টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট সকালের সূর্যের রোদে থাকা শরীরে ভিটামিন ডি বাড়ায়, যা হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে। যাঁরা বাইরে কাজ করেন না, তাঁরা অন্তত সকালের নরম রোদে সময় কাটানোর অভ্যাস করুন। প্রয়োজনে ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টও খাওয়া যেতে পারে।
বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত, সঠিক জীবনযাত্রা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। ব্যায়াম, সুষম খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক শান্তি বজায় রাখা এই হরমোনকে স্বাভাবিক রাখে। যাঁদের হরমোনের সমস্যা গুরুতর, তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
টেস্টোস্টেরন শুধুমাত্র পুং হরমোন নয়, এটি শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শরীরকে ফিট রাখতে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে আজ থেকেই শুরু করুন এই সহজ ও বিজ্ঞানসম্মত টিপসগুলি। সুস্থ জীবনযাত্রা এবং নিয়মিত অভ্যাসেই রয়েছে সঠিক সমাধান।