Dizziness Syndrome: আপনি কি মাঝেমধ্যে দাঁড়িয়ে থাকার সময় হঠাৎ মাথা ঘোরার মতো অনুভব করেন? বা মনে হয়, শরীর যেন হালকা হয়ে গেছে, চোখের সামনে ঝাপসা দেখছেন? এমনকি কিছুক্ষণের জন্য বেহুঁশ হয়ে যাচ্ছেন? যদি এরকম অভিজ্ঞতা আপনারও হয়ে থাকে, তবে সাবধান হওয়ার সময় এসেছে। কারণ এই উপসর্গ কোনও সাধারণ ক্লান্তি নয়, বরং রক্তচাপজনিত সমস্যা বা স্নায়বিক দুর্বলতার ইঙ্গিত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি হতে পারে অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন বা পোস্টুরাল হাইপোটেনশন, অর্থাৎ হঠাৎ করে বসা বা শোয়া অবস্থান থেকে উঠে দাঁড়ানোর সময় রক্তচাপের পতন। যার ফলে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত রক্ত না পৌঁছনোর কারণে মাথা ঘোরা বা ব্ল্যাক আউট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কেন এমন হয় এবং কীভাবে সামলাবেন, দেখে নিন
১. হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়া
শুয়ে বা বসে থাকার পর যদি হঠাৎ উঠে দাঁড়ান, তাহলে মস্তিষ্কে রক্ত পৌঁছতে কিছুটা সময় লাগে। এতে রক্তচাপ হঠাৎ পড়ে যেতে পারে, আর তাতেই মাথা ঘোরে। এই অবস্থায় ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ান। প্রয়োজনে দেওয়ালের সাপোর্ট নিন বা একটু বসে থাকুন।
২. অতিরিক্ত গরম বা ডিহাইড্রেশন
তাপমাত্রা বেড়ে গেলে অথবা শরীরে জল কমে গেলে রক্তচাপ পড়ে যায়। এতে মাথা ঘোরা বা ক্লান্ত লাগা স্বাভাবিক।
৩. অ্যালকোহল
অতিরিক্ত অ্যালকোহল রক্তনালী সংকুচিত করে এবং রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। ফলে দাঁড়ানোর সময় মাথা ঘোরে।
৪. ওয়ার্কআউট বা ব্যায়াম
কঠিন ওয়ার্কআউটের পর হঠাৎ থেমে গেলে রক্তচাপ নামতে পারে। এতে মাথা ঘোরে বা ঝাপসা দেখেন অনেকে।
৫. কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ডায়রেটিকস, বিটা ব্লকার, এসিই ইনহিবিটর এই ধরনের ওষুধ রক্তচাপ কমাতে পারে এবং দাঁড়ানোর সময় মাথা ঘোরাতে পারে।
৬. POTS (Postural Orthostatic Tachycardia Syndrome)
এই অবস্থা হলে শরীর নিজের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ফলে দাঁড়ানোর সময় দীর্ঘক্ষণ মাথা ঘোরে, ক্লান্ত লাগে।
হৃদরোগ, থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, পারকিনসন্স, কানের সমস্যা, এমনকি মানসিক চাপ থেকেও হতে পারে মাথা ঘোরার সমস্যা।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
মাথা ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে বমি বমি ভাব বা চোখে অন্ধকার দেখা দিলে।অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে না পারলে। চলাফেরার সময় ভারসাম্য হারালে। শরীর দুর্বল লাগলে, বুক ধড়ফড় করলে।
মার্কিন চিকিৎসক অ্যামি সারো-র মতে, মাথা ঘোরার সমস্যা যদি ঘন ঘন হতে থাকে, এবং দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলতে থাকে, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন?
প্রচুর জল খান, হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান, দিনে অন্তত ১৫-২০ মিনিট হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন, লবণযুক্ত খাবার মাঝেমধ্যে উপকারী হতে পারে (ডাক্তারের পরামর্শে)
চাপ বা উদ্বেগ কমান
দাঁড়িয়ে মাথা ঘোরা কোনও তুচ্ছ বিষয় নয়। এটি আপনার শরীরের ভিতরের একটি সতর্কবার্তা। নিয়ম মেনে জীবনযাপন করুন, প্রয়োজনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। কারণ সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।